এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার পদবি ব্যবহার বন্ধ, ম্যাটসের কার্যক্রম বন্ধ, বিসিএস পরীক্ষায় বয়স বৃদ্ধিসহ পাঁচ দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন তিন মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও বগুড়ায় চলা এ ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে যাওয়া রোগীরা। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।
দাবি আদায়ে রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বগুড়ায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে ছিলিমপুর এলাকা দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইন্টার্নরা।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. আল শাহারিয়ার খান আকাশ বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হঠকারী সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে বগুড়ায় মেডিকেল শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আন্দোলনে নেমেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ক্লাস, পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন ইন্টার্নরা। দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে শূন্য পদ পূরণ ও মানহীন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল বন্ধের দাবি জানান তারা।
এদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একই দাবিতে সোচ্চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। তবে তাদের কর্মবিরতির কারণে বিপাকে চিকিৎসাধীন ও সেবা নিতে যাওয়া রোগীরা।
পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতীত কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবেন না। বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। বিএমডিসি থেকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট এবং এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওষুধ লিখতে পারবেন না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সব শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে পূর্বের মতো ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে এবং ডাক্তারদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে। সকল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজসমূহ বন্ধ করে দিতে হবে।
এরই মধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুনভাবে ম্যাটসে ভর্তি বন্ধ করতে হবে। ম্যাটস শিক্ষার্থীদের প্যারামেডিকলে প্রবেশ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে ম্যাটস বন্ধ করতে হবে এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।