করোনাভাইরাসের কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীকে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। এই প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি তো এখানে বেঁচে থাকার জন্য আসি নাই। আমি তো জীবনটা বাংলার মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতেই এসেছি।
বুধবার সংসদে তোলা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রাঙ্গা করোনা পরিস্থিতিতে কয়েকটি উন্নত দেশে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্লামেন্ট অধিবেশন পরিচালনার কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড ও কানাডা তিনটি দেশের কথা জানি। তারা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্লামেন্ট পরিচালনা করছেন। তাদের অনেকেই সংসদে আসছেন না। সংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের সংসদে আসতে অসুবিধা নেই, কিন্তু জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি সংসদে না এসে যদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উনি বাড়িতে থেকে যদি কথা বলতেন আমরা নিশ্চিন্ত হতাম।
পরে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় শেখ হাসিনা তার ওই প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
নিজের জীবন নিয়ে কোনো চিন্তা করেন না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ মরণশীল। যখন জন্মেছি, মরতে একদিন হবেই। করোনায় মরি, গুলি খেয়ে মরি, বোমা খেয়ে মরি, অসুস্থ হয়ে মরি বা কথা বলতে বলতে মরে যেতে পারি। কাজেই মৃত্যু যেখানে অবধারিত, মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি ভয় পাইনি কখনো, পাবও না।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বাংলাদেশের ইতিহাসের সেই কালো অধ্যায়ের কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমি যখন দেশে ফিরে আসি সেই বাংলাদেশে- যেখানে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে, আমার মা, এমনকি ছোট্ট ভাই শিশু রাসেলও রক্ষা পায়নি। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর স্ত্রী মারা গেছেন। সাহানা আবদুল্লাহসহ আমাদের পরিবারের বহুজন বুলেটবিদ্ধ। সেই খুনিদের তখন বিচার হয়নি। তাদের ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে। তারা ছিল ক্ষমতায়, যুদ্ধাপরাধীরা তখন ক্ষমতায়। ওই অবস্থায় আমি দেশে ফিরে এসেছি। আমি যদি ভীত হতাম হয়তো আর জীবনে আসতে পারতাম না। কিন্তু আমি তো ভয় পাইনি। আল্লাহ জীবন দিয়েছে, আল্লাহ একদিন নিয়ে যাবে। এটাই আমি বিশ্বাস করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলেছি একদিকে করোনা মোকাবেলা করব, পাশাপাশি মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনটা যাতে চলে তারা যেন কষ্ট না পায় তাদের জন্য যা করণীয় সেটা করে যাব। কাজেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চলুন সবাই মিলে আল্লাহর কাছে দোয়া করি এই করোনাভাইরাসের হাত থেকে যেন মানব জাতি রক্ষা পায়।