ভারতে মোদি সরকারের মন্ত্রী নারায়ণ রানেকে গ্রেপ্তার করলো মহারাষ্ট্র পুলিশ। ভারতে ২০ বছর পর এরকম ঘটনা ঘটল। পরে অবশ্য জামিনও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। ভারতের মহারাষ্ট্রে গিয়ে একটি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চড় মারার কথা বলেছিলেন রানে। তিনি জানিয়েছিলেন, এটা কত তম স্বাধীনতা দিবস তা উদ্ধব জানতেন না। পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তির কাছ থেকে তাকে জানতে হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে এই অজ্ঞানতার জন্যই তাকে চড় মেরেছিলেন রানে- এমনটাই জানান রানে।
রানের এই মন্তব্য ঘিরে দেশটির মহারাষ্ট্রে হইচই শুরু হয়ে যায়। শিবসেনা কর্মীরা রাস্তায় নেমে পড়ে। কিছু জায়গায় তারা বিজেপি অফিস আক্রমণ করে। প্রতিবাদে বিজেপি বুধবার মহারাষ্ট্র জুড়ে প্রতিবাদ দিবস পালন করছে।
তবে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে রানে আদালতের কাছে জামিন পেয়েছেন। তাকে বলতে হয়েছে, এই ধরনের মন্তব্য তিনি আর করবেন না। আর ৩১ অগাস্ট ও ১৩ সেপ্টেম্বর তাকে পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে হবে। জামিন পাওয়ার পর রানে বলেছেন, সত্যমেব জয়তে। রানের আইনজীবী জানিয়েছেন, মন্ত্রী যখন খাচ্ছিলেন, তখন পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। তারা হাইকোর্টে যান। পরে নিম্ন আদালতে রানের জামিন হয়।
রানের বিরুদ্ধে শিবসেনা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। যার জেরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করলো কোনো রাজ্য সরকার। নারায়ণ রানে একসময় শিবসেনাতে ছিলেন। বালাসাহেব ঠাকরের আমলে শিবসেনাতেই তার উত্থান। শিবসেনার অভিযোগ, রানে জেনেবুঝে মহারাষ্ট্রে উত্তেজনা ছড়াতে চাইছেন। তাই তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
মন্ত্রিসভার শেষ রদবদলে তাকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ছোট ও মাঝারি শিল্পের দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়। তাকে মন্ত্রী করার জন্য প্রকাশ জাভড়েকরকে বাদ দেয়া হয়। রানে কোঙ্কনের নেতা। দক্ষ সংগঠক। তাই পরবর্তী লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদী।
তবে রাজ্যের সাবেক বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস বলেছেন, তিনি রানের মন্তব্য সমর্থন করেন না। কিন্তু পুলিশ যেভাবে তাকে গ্রেপ্তার করেছে, তা কিছুতেই মানা যায় না।
সবমিলিয়ে রানের মন্তব্য ও তাকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্র তথা ভারতের রাজনীতি। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, এটা কি কোনো বিপজ্জনক প্রবণতার জন্ম দিল? এই প্রশ্নও উঠেছে যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যে কোনো মন্তব্য করে পার পেয়ে যাবেন, সেটাও কি সুস্থ গণতান্ত্রিক রীতি?