সীমান্ত সমস্যা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে চীন ও ভারত। সম্প্রতি দেশ দুটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। তবে এমন অবস্থার মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। চীন জিনজিয়াংয়ে দুটি নতুন কাউন্টি প্রশাসনিক সদর দপ্তর তৈরি করেছে। যার মধ্যে একটি ভারতীয় অঞ্চল নিয়ে গঠিত। শনিবার (৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ-১৮’ এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হোটান প্রিফেকচার দ্বারা পরিচালিত কাউন্টিগুলো চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্টেট কাউন্সিল দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে। হংলিউ এবং জিডুলা নামে দু’টি শহরকে যথাক্রমে হিয়ান এবং হেকাংয়ের ‘কাউন্টি’ (প্রশাসনিক সদর দপ্তর) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
মূলত, দখল করা আকসাই চীনের প্রায় ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটারের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে হিয়ান কাউন্টি।
এদিকে, ঘাড়ের ওপর দুই নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, চীনের ঘোষিত কাউন্টির কিছু অংশ ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের মধ্যে পড়েছে।
প্রতিবেশী দেশটি দুটি কাউন্টি প্রতিষ্ঠা ঘোষণার পর ভারত কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আপত্তি ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, তথাকথিত কাউন্টিগুলোর কিছু অংশ লাদাখের অধীনে পড়ে। ভারত কখনই এই অঞ্চলে ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনের অবৈধ দখলদারিত্বকে মেনে নেবে না।
জয়সওয়াল বলেন, আমরা দুটি নতুন কাউন্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেখেছি। এই তথাকথিত কাউন্টিগুলোর এখতিয়ারের কিছু অংশ ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে পড়েছে। এই এলাকায় ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনের বেআইনি দখলদারিত্ব আমরা কখনই মেনে নেইনি।
রণধীর জয়সওয়াল আরও বলেন, নতুন কাউন্টি গঠন ওই এলাকার ওপর আমাদের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে ভারতের দীর্ঘস্থায়ী ও ধারাবাহিক অবস্থানের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না এবং চীনের অবৈধ ও জোরপূর্বক দখলদারিত্বকেও বৈধতা দেবে না। আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে চিনের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছি।
সীমান্ত আলোচনার জন্য নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের বিশেষ প্রতিনিধি– ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গত ১৮ ডিসেম্বর বৈঠক করেন। এর মাধ্যমে গত ৫ বছর ধরে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বন্ধ থাকা আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছিল।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে স্থগিত থাকা দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিরা সীমান্ত আলোচনা পুনরায় শুরুর মাত্র ১০ দিন পরে চীন এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্ব লাদাখের সীমান্তবর্তী আকসাই চীনে ভারতের প্রায় ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ছাড়াও পাকিস্তান ১৯৬৩ সালে সাক্সগাম উপত্যকায় ভারতের প্রায় ৫ হাজার ১৮০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল চীনের কাছে হস্তান্তর করে।