রংটা সবুজ। দেখতে ফুলকপির মতো। এ সবজিটির নাম ব্রোকলি। ব্রোকলি গ্রামে-গঞ্জে তেমন পরিচিত নয়। এখানে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার গোপালপুর গ্রামে সেই ব্রোকলি চাষ করে লাভবান ফারুক আহমেদ।
তিনি এবার প্রায় ছয় বিঘা জমিতে ব্রোকলির চারা রোপণ করেন। ৫০ দিনের মধ্যে এতে পূর্ণ ব্রোকলি হয়। প্রতি কেজি ব্রোকলি ৫০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফারুক আহমেদ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের মুড়ারবন্দ ব্লকে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হিসেবে কর্মরত। অফিসের দায়িত্ব পালন শেষে তিনি নিজ বাড়ির পাশে জমিতে চাষাবাদে মগ্ন থাকেন।
তিনি জানান, এই মৌসুমে এ পর্যন্ত তার উৎপাদিত ব্রোকলি বিক্রি থেকে দুই লাখ টাকা এসেছে। আরো ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রোকলি চাষে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচে দুই বিঘা জমিতে টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজি চাষ করেন। এসব সবজি বিক্রি থেকে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আসবে।
৮ বছর যাবৎ তিনি গোপালপুরে হাইব্রিড ব্রোকলি চাষ করছেন। তার জমিতে এর চাষ দেখে স্থানীয় চাষিরা উৎসাহিত হয়েছেন। তারাও নিজেদের জমিতে এর চাষে এগিয়ে এসেছেন।
তার থেকে বুদ্ধি-পরামর্শ নিয়ে ব্রোকলি চাষ করেছেন গোপালপুরের কয়েকজন কৃষক। তারাও ব্রোকলি বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন। তারা জানান, অচেনা থাকা এই সবজিটি এখন এখানের ক্রেতাদের কাছে খুবই প্রিয় হয়ে উঠেছে।
ফারুক আহমেদ বলেন, ফুলকপির মতো দেখতে গাঢ় সবুজ রংয়ের শীতকালীন এই ফসলটি হবিগঞ্জের কোথাও দেখতে পাওয়া যেত না। এখন এটি এখানে বেশ পরিচিত সবজি।
তিনি বলেন, পুষ্টিগুণে ভরপুর এ সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মাহিদুল ইসলাম বলেন, ব্রোকলির চাষে ফারুক আহমেদ সফল। তার চাষাবাদে উৎসাহিত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে। তিনি প্রায় ৮ বছর যাবৎ ব্রোকলি চাষ করছেন। এবারও ভাল ফলন হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ আশেক পারভেজ জানান, ফারুক আহমেদের সফলতা দেখে উৎসাহিত হয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় একই সঙ্গে ব্রোকলি ও টমেটো চাষাবাদ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষকরা। বিশেষ করে ব্রোকলিতে ভিটামিন সি, ক্যান্সার প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ, বয়স ঠেকায় ও ত্বক সুন্দর করে।