প্রিন্স ফিলিপ ও ডিউক অব এডিনবারা ৯৯ বছর বয়সে গত শুক্রবার মারা গেছেন। তিনি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে ৭৩ বছরের বিবাহিত জীবন কাটিয়েছেন। ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসে তিনিই কোনো রাজা বা রানির সবচেয়ে দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গী ছিলেন। ৯৪ বছর বয়সি রানি ও তার সদ্যপ্রয়াত স্বামীর চার সন্তান, ৮ নাতি-নাতনি ও ৯ প্রোপৌত্র-প্রোপৌত্রি রয়েছে।
রাজপরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে বিয়ের পর তাকে একটি রাজকীয় উপাধি দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, লেডি ডায়না স্পেনসার ১৯৮১ সালে প্রিন্স চার্লসকে বিয়ের পর প্রিন্সেস অব ওয়েলস হয়েছিলেন। তবে রাজা বা রানি হতে হলে তাকে অবশ্য রাজপরিবারেই জন্ম নিতে হবে। এখন সিংহাসনের উত্তরাধকার প্রিন্স চার্লস, তারপর দ্বিতীয় প্রিন্স উইলিয়াম, তারপর উইলিয়ামের বড় সন্তান প্রিন্স জর্জ তৃতীয় উত্তরাধিকার।
ব্রিটিশ সরকারকে বলা হয় হার মেজেস্টিস গভর্নমেন্ট, যদিও রানির কার্যত কোনো রাজনৈতিক ক্ষমতা নেই। রানি সপ্তাহে এক দিন প্রধানমন্ত্রীকে সাক্ষাত্ দেন, যেটি মূলত সরকারে তার অবস্থানকে মনে করিয়ে দেওয়া। তবে প্রধানমন্ত্রী নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে রানির কোনো অনুমোদন চান না। রানি ও রাজপরিবারের অন্য সিনিয়র সদস্যরা অফিশিয়াল কর্মসূচিতে অংশ নেন। পরিবারের সদস্যরা অন্য দেশে ভ্রমণের সময় রানিকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
রাজপরিবারের সদস্যরা অনেকে নানা দাতব্য সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতা করেন এবং কেউ নিজেও এমন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। যেমন ডিউক অব এডিনবারা অ্যাওয়ার্ড প্রকল্প আছে তরুণদের জন্য। সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। প্রিন্স উইলিয়াম রাজকীয় বিমান বাহিনী ও প্রিন্স হ্যারি সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন।
রাজপরিবারের সদস্যরা কি সব সময় সরকারি দায়িত্ব পালন করেন না? গত বছর প্রিন্স হ্যারি ও মেগান দম্পতি ঘোষণা করেন যে, তারা রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে যাবেন এবং স্বাধীন উপার্জনের জন্য কাজ করবেন। বাকিংহ্যাম প্যালেস নিশ্চিত করেছে, এই দম্পতি সেনাবাহিনীতে তাদের সম্মানজনক পদ ও রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা ফিরিয়ে দেবেন, যা রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে পুনর্বণ্টন করা হবে। এর আগে ২০১৯ সালে ডিউক অব ইয়র্ক (প্রিন্স অ্যান্ড্রু) রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি একজন যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা স্বীকার পরার পর এ ঘটনা ঘটে।