ব্যাংকের কাজে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় এবং কৃচ্ছ্রসাধনের নির্দেশনা পরিপালনের নির্দেশনা স্পষ্ট করে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূত বা প্রাধিকার-বহির্ভূতভাবে ব্যাংকের গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, বিদ্যুৎ বাতি, গিজার ও বৈদ্যুতিক কেটলির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। গতকাল এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।
সংশ্নিষ্টরা জানান, ব্যাংকের পরিচালক বা প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের অনেকে প্রাধিকার-বহির্ভূতভাবে গাড়ি ব্যবহার করেন। কখনও কখনও ব্যাংকের পুলের গাড়ি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও নিয়ে থাকেন। আবার চেয়ারম্যান, পরিচালক বা এমডির সঙ্গে সুসম্পর্কের ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের কেউ কেউ প্রাধিকার-বহির্ভূতভাবে গাড়ি ব্যবহার করেন। প্রতি ক্ষেত্রে ব্যাংকের টাকায় জ্বালানিসহ গাড়ি সরবরাহ করা হয়।
এর আগে গত ২৬ জুলাই এক নির্দেশনার মাধ্যমে চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বিদ্যুতে ২৫ শতাংশ এবং জ্বালানিতে ২০ শতাংশ খরচ কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। আগের ওই নির্দেশনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে গতকালের সার্কুলারে বলা হয়েছে, কভিড-১৯জনিত অর্থনৈতিক অভিঘাত এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি, খাদ্য ও নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ব্যয়-সাশ্রয় ও কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে ওই সার্কুলারে দেওয়া নির্দেশনার অধিকতর স্পষ্টীকরণ এবং যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হলো।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, জ্বালানি তথা পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, গ্যাস ও লুব্রিকেন্টের ব্যবহার ২০ শতাংশ বা তার বেশি কমিয়ে আনার ব্যবস্থা চলমান রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বরাদ্দ করা জ্বালানির অপব্যবহার যেমন- ব্যক্তিগত কাজে বিধিবহির্ভূতভাবে অফিসের গাড়ির ব্যবহার বা প্রাধিকারবহির্ভূত গাড়ি বরাদ্দ নেওয়া রোধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ বা তার বেশি কমিয়ে আনার বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৮০টি। এছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও একাধিক আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। এর বাইরে ১২ হাজার ৯৭২টি এটিএম বুথ, এক হাজার ৬৯৫টি ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন ও এক হাজার ৬৭২টি ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন রয়েছে। উপশাখা রয়েছে বিপুল সংখ্যক। এজেন্ট আউটলেট রয়েছে ১৯ হাজার ৬৪২টি। সাধারণভাবে অন্য ব্যবসায়িক স্থাপনার তুলনায় ব্যাংকের ব্যবসাকেন্দ্রে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যয় বেশি হয়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা যথাযথভাবে কার্যকর হলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে তা বড় প্রভাব রাখবে।