বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে সন্ত্রাসী এবং ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের দোসর বলে অভিযুক্ত করেছে। একপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ এবং আরেকপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাল্টাপাল্টি  হামলার ঘটনা ঘটে দুই পক্ষ জানায়। পরে রাতে ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হলে দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়।

মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ অভিযোগ করেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে নগরের লালখান বাজার এলাকায় তাদেরকে অবরুদ্ধ করে হামলার করা হয়েছে।

একই স্থানে রাফির অনুসারী ছাত্র আন্দোলনে আহত জুনায়েদুল ইসলাম, সমন্বয়ক ওয়াদুদ মোরমেদ ও লিজা আক্তার অন্যপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানান।

এ ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল রাফি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আসেন। সংবাদ সম্মেলন শুরু করার কিছুক্ষণ পর অন্যপক্ষ হাজির হয়ে হট্টগোল শুরু করে। সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করতে বাধ্য হন রাফি। তোপের মুখের তাকে পাহারা দিয়ে অনুসারীরা প্রেস ক্লাব থেকে বের হয়ে যায়। তখন দুইপক্ষ ফের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে হাতাহাতির অবস্থা সৃষ্টি হয়।

কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ জানিয়েছেন, শনিবার চট্টগ্রামে ‘ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ডট গ্যাং’ তাদের ওপর এই হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রাত ৯টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিং করা হয়।

এসময় আবদুল্লাহ আল রাফি বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ছিল না। হান্নান রাতে কল দিয়ে বলেছেন, আমি চট্টগ্রামে আসতেছি। লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ছিল, সেটা। তিনটায় কর্মসূচি ছিল। আমি ক্যাম্পাসে থাকায় ৪টায় শহরে আসছি। আমি ঢুকলাম। হান্নান মাসুদ, রাসেল ছিলেন।’

সংবাদ সস্মেলন চলাকালে তখনই আরেকপক্ষ প্রেস ক্লাবের হলে ঢোকে। চাঁদাবাজের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না- স্লোগান দিতে থাকে তারা। এতে দুইপক্ষ মুখোমুখি হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রাফি সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে হল থেকে বের হয়ে যান। সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবি করেন।

রাফির অনুসারী আহত জুনায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘মাসুদকে আজকের কর্মসূচি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাকে “হু আর ইউ। যাকে জানানোর দরকার ছিল, আমি তাদের জানিয়ে চট্টগ্রামে এসেছি” বলেন। তখন আমি বলি, আমাদের যারা চিনে না, আমরাও সেই কেন্দ্রীয় সমন্বয়ককে চিনি না। তখন লালখান বাজার এলাকায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ, রাসেলের সামনে আমাদেরকে মারধর করা হয়।’

রাফির আরেক অনুসারী চট্টগ্রাম কলেজের সমন্বয়ক ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘ছাত্রদলের ওমর ফারুক, তানভীর শরীফ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেলের নেতৃত্বে হামলা চালিয়েছে। তখন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ উপস্থিত ছিলেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ টোকাই নিয়ে এসেছিলেন। ছুরি, রাম দা, কিরিচ নিয়ে টোকাইরা আমাকে, ওয়াদুদ মোরশেদ ও আন্দোলনে আহত জুনাইদুল ইসলামকে মারধর করে।’

এর আগে, শনিবার বিকেল ৩টায় নগরের বিপ্লব উদ্যানে পথসভা, লিফলেট বিতরণ ও জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করেন আব্দুল হান্নান মাসউদ ও রাসেল আহমেদ।

Comments (0)
Add Comment