ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি অত্যাধুনিক ন্যানো ল্যাব স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বুয়েটে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি অত্যাধুনিক ন্যানো ল্যাব স্থাপনের কাজ শুরু করার অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যেটা ইতোমধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় চলে গেছে। ২০৪১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত বৈষম্যমুক্ত, জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জন করার জন্য প্রয়োজন মেধাবী স্মার্ট প্রজন্ম, যারা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে।
প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব রোবটিক্স অ্যান্ড অটোমেশনের (আইআরএবি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ ঘোষণা দেন।
পলক বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থীদের রোবোটিক্স সম্পর্কে আরও বেশি করে শেখা ও জানার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বুয়েটে ইনস্টিটিউট অব রোবটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন আমরা স্থাপন করছি। আগামী ২-৩ দশকে প্রযুক্তি আমাদের সবকিছুর আমূল পরিবর্তন করে দেবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাকে খরচ নয়, বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করতেন। আমরা রোবোটিক্সকে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় নয়, কলেজ, স্কুল, এমনকি প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় নির্দেশনা দিয়েছেন রোবোটিক্স, মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং, এআই, এবং সাইবার সিকিউরিটি এই চারটি ফ্রন্টিয়ার টেকনোলোজিতে দক্ষ জনবল ও কর্মী তৈরি করতে। আগামীর স্মার্ট পৃথিবীতে স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব তারাই দেবে যারা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিক্স, মাইক্রোচিপ ও সাইবার সিকিউরিটিতে দক্ষ ও যোগ্য হবে। ভবিষ্যতে আমাদের কোনোকিছুই প্রযুক্তির বাইরে থাকতে পারবে না।
পলক বলেন, বুয়েটে রোবোটিক্স থেকে শুরু করে সাইবার সিকিউরিটি, মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং, এআই, এই চারটি ক্ষেত্রে যেকোনো উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে যা কিছু সহযোগিতা প্রয়োজন হবে, সেটা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে আমাদেরকে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। আমাদের ছোট আকারের রোবোটিক্স ল্যাব থেকে আজ রোবোটিক্স ইনস্টিটিউট হচ্ছে। ভবিষ্যতে রোবোটিক্সের উদ্ভাবক, গবেষক, স্টার্টআপগুলো এখান থেকেই তৈরি হবে। সাথে সাথে রোবোটিক্সে দক্ষ জনশক্তি আমরা এখান থেকেই গড়ে তুলতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি ইউনিভার্সিটি-ইন্ডাস্ট্রির কোলাবোরেশন না করতে পারি, শিক্ষার্থীদের মাঝে যদি ব্যবসায় উদ্যোক্তার মানসিকতা তৈরি না করতে পারি তাহলে ইনোভেটিভ-স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া কষ্টসাধ্য হবে। বুয়েটে ইনস্টিটিউট অব রোবটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন স্থাপনের কাজ শুরু করেছি, আমাদের কাজ এখানেই শেষ নয়, এর পরের ধাপগুলোতে আমরা আরও ভবিষ্যতমুখী প্রযুক্তিতে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশনা পেয়েছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রতিমন্ত্রীসহ সব অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তৈরি রোবোসেবা – হেলথ অবজেক্টিভ রোবট।
অনুষ্ঠানে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন ও বুয়েটের উপ-উপচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন।