যশোরের অভয়নগরে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কেয়া খাতুন (৩০) নামে এক নারী শ্রমিককে রড দিয়ে পিটিয়ে ও এসিড দিয়ে ঝলসে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার অভিযোগে শামীম হোসেন (৩৫) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার তালতলা এলাকায় যশোর-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন এসএএফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি চামড়ার মিলের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। নিহত কেয়া খাতুন উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের কাদিরপাড়া গ্রামের মৃত আবুল কালামের মেয়ে। আটক শামীম হোসেন উপজেলার রাজঘাট মাইলপোস্ট এলাকার খন্দকার মোশারফ হোসেনের ছেলে। তারা উভয় একই মিলে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, সোমবার দুপুরে টিফিনের সময় মিলের ভেতরে ক্যান্টিনের পাশে কেয়া বসে ছিলেন। এ সময় শামীম এসে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হলে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে লোহার রড দিয়ে কেয়ার মাথায় আঘাত করেন। কেয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মিলের ভেতর থেকে একটি মগে এসিড এনে তার শরীর ও মুখে ঢেলে দেন। কেয়ার চিৎকারে ক্যান্টিনের ভেতরে থাকা শ্রমিকরা এগিয়ে এসে শামীমকে ধরে মিল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষ আহত কেয়াকে খুলনা আদ-দ্বীন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় এবং শামীমকে অভয়নগর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
নিহত কেয়ার মামা হাবিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় খুলনার আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ভাগ্নি কেয়া মারা যায়। গত ১০ বছর ধরে ১১ বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান নিয়ে সে গ্রামে বসবাস করে আসছে। একই মিলে চাকরি করায় শামীম দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাগ্নি কেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রাজি না হওয়ায় শামীম আমার ভাগ্নিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। খুনি শামীমের ফাঁসি দাবি করেন তিনি।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শামীম হাসান জানান, পরকীয়া প্রেমের কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে আটক শামীম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। আজ বুধবার ২৬ (অক্টোবর) তাকে যশোর আদালতে পাঠানো হবে। এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।