বিশ্বে এই প্রথম নারীর দেহে শূকরের কিডনি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শল্যচিকিৎসকরা দ্বিতীয়বারের মতো এক জীবিত ব্যক্তির দেহে সফলভাবে ‘জেনেটিকালি-মডিফাইড’ শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। হাসপাতাল জানিয়েছে, পশু থেকে মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। নিউইয়র্কের এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথে গোটা প্রক্রিয়াটি এপ্রিল মাসে সম্পন্ন হয় বছর ৫৪ এর লিসা পিসানোর দেহে। লিসা একইসঙ্গে হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতা এবং কিডনির রোগে ভুগছিলেন। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, তার হাতে মাত্র কয়েক সপ্তাহ সময় আছে। সার্জনরা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কয়েক দিন আগে পিসানোর দেহে একটি যান্ত্রিক হার্ট পাম্প স্থাপন করেছিলেন, এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথ কেয়ারের মতে, এই সম্মিলিত পদ্ধতির প্রয়োগ বিশ্বে প্রথম।

‘জেনেটিকালি-মডিফাইড’ কিডনি ছাড়াও, ডাক্তাররাও প্রথমবারের মতো জীবিত রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করেছেন শূকরের থাইমাস গ্রন্থি, যা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং অঙ্গ প্রত্যাখ্যানের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। লিড সার্জন ডাঃ রবার্ট মন্টগোমারি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অপারেশনটি জীবন রক্ষাকারী অঙ্গ যাদের প্রয়োজন তাদের জন্য আমাদের যাত্রার একটি মাইলফলক।

মন্টগোমারি ২০২১ সালে একজন মস্তিষ্ক-মৃত ব্যক্তির উপর বিশ্বে প্রথম জিন-সম্পাদিত শূকর-থেকে-মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপন করেছিলেন। তার মতে, ‘সময় যত এগোবে আর কাউকে মরতে হবে না, অঙ্গ পেতে অন্য কারও জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। ‘

একজন জীবিত রোগীর মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি শূকর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল মার্চ মাসে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে, তিনি ছিলেন ৬২বছর বয়সী ব্যক্তি। মানবদেহ প্রাণীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন করার আগে জিনগতভাবে পরিবর্তন করতে হবে যাতে তারা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করে।

জিনগতভাবে পরিবর্তিত শূকরের হার্ট ২০২৩ সালে মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই রোগীর মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু উভয়ই দুই মাসেরও কম সময়ে বেঁচে ছিল। নিউ জার্সির বাসিন্দা পিসানো বলেছেন, চিকিৎসার এই পদ্ধতিটি বেছে নেয়ার আগে তিনি ‘অন্যান্য সমস্ত সংস্থান নিঃশেষ করেছেন’।
হাসপাতালের একটি বিবৃতি অনুসারে, মানব কিডনির সাথে তার মিল খুঁজে পেতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। পিসানো বলেছেন, যদি এটি কাজ না করে তবে এটি পরবর্তী কোনো ব্যক্তির দেহে কাজ করতে পারে। অন্তত কেউ এর থেকে উপকৃত হবে।

মন্টগোমারি বলেন, পিসানোর কিডনির কার্যকারিতা এখনো পর্যন্ত ‘নিখুঁত’।

সূত্র : সায়েন্স এলার্ট

Comments (0)
Add Comment