টেসলার সিইও ইলন মাস্ককে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী হয়েছেন ফ্রান্সের বার্নার্ড আর্নল্ট। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরাসি বিলাস দ্রব্য সংস্থা এলভিএমএইচ এর চেয়ারম্যান আর্নল্ট ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। আর এতে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে থাকা টুইটারের নতুন মালিক মাস্কের অবস্থান নেমে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, আর্নল্টের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৭১ বিলিয়ন, যা টেসলার সিইও মাস্কের ১৬৪ বিলিয়নকে ছাড়িয়ে গেছে। গত সপ্তাহে প্যারিস ভিত্তিক টাইকুন ফোর্বসের ‘রিয়েল টাইম বিলিয়নেয়ার’ তালিকার শীর্ষে রয়েছেন তিনি।
আর্নল্টের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৭১ বিলিয়ন, যা টেসলার সিইও মাস্কের ১৬৪ বিলিয়নকে ছাড়িয়ে গেছে।
আর্নল্টের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৭১ বিলিয়ন, যা টেসলার সিইও মাস্কের ১৬৪ বিলিয়নকে ছাড়িয়ে গেছে।
যাই হোক যদিও তিনি প্রচুর সম্পদের মালিক হন, আর্নল্ট লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করেন। তাই জেফ বেজোস, বিল গেটস, গৌতম আদানি বা ইলন মাস্ককে যেভাবে সবাই চেনেন, আর্নল্টকে হয়তো অনেকেই চেনেন না। এতদসত্ত্বেও তিনি এ বছরের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় নিজের প্রথম স্থান ঠিকই নিশ্চিত করেছেন।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, মাস্ক এই বছর মোট ১০৭ বিলিয়ন খুইয়েছেন। টেসলার শেয়ারের দাম কমে যাওয়া ও টুইটার সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝামেলার কারণে তাকে এখন পর্যন্ত বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে। ফলে ধনীদের তালিকায় প্রথম স্থান থেকে নেমে পড়েছেন তিনি।
টেসলার শেয়ারের দাম কমে যাওয়া ও টুইটার সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝামেলার কারণে তাকে এখন পর্যন্ত বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে।
অন্যদিকে, করোনা মহামারীর প্রভাব ও বৈশ্বিক মন্দার কারণে এ বছর আর্নল্টের সম্পদ প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার কমেছে, কিন্তু সেটা তাকে শীর্ষস্থানে পৌঁছাতে বাধা দেয়নি।
মঙ্গলবার ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই আলোচনার কেন্দ্রে জায়গাজুড়ে বসেছেন ফরাসি ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট। আর্নল্ট ১৯৪৯ সালে ফ্রান্সের উত্তরে রুবাইক্সে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্যারিসের একটি বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল ইকোল পলিটেকনিক থেকে স্নাতক হন।
আর্নল্ট ১৯৪৯ সালে ফ্রান্সের উত্তরে রুবাইক্সে জন্মগ্রহণ করেন।
এরপর পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ব্যবসায় ধারাবাহিক প্রচারের মাধ্যমে, তিনি ১৯৭৮ সালে পারিবারিক ফার্ম ফেরেট-স্যাভিনেল (বিল্ডিং উপকরণ কোম্পানি) এর চেয়ারম্যান হন।
ছয় বছর পর আর্নল্ট ফরাসি সরকারের কাছ থেকে দেউলিয়া টেক্সটাইল কোম্পানি বুসাক সেন্ট-ফ্রেস কিনে নেয়। দেউলিয়া টেক্সটাইল গ্রুপটি বিখ্যাত ফরাসি ফ্যাশন হাউস ক্রিশ্চিয়ান ডিওরের মালিকানাধীন ছিল। ফলে এই সংস্থার নিয়ন্ত্রণও চলে আসে আর্নল্টের হাতে।
আর্নল্ট ফরাসি সরকারের কাছ থেকে দেউলিয়া টেক্সটাইল কোম্পানি বুসাক সেন্ট-ফ্রেস কিনে নেন।
ঋণগ্রস্ত গোষ্ঠীটি ধীরে ধীরে আর্নল্টের নেতৃত্বে বিশিষ্টতা লাভ করে ও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিলাসবহুল পণ্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। লুই ভিটন, ক্রিশ্চিয়ান ডিওর, হুব্লট, লে পার্সিয়ানের মতো কোম্পানিগুলো আর্নল্টের কোম্পানি এলভিএমএইচ এর অন্তর্গত।
১৯৮৭ সালে লুই ভিটন এবং মোয়েট হেনেসির সঙ্গে এলভিএমএইচ গ্রুপ গঠিত হওয়ার কয়েক বছর পর, ১৯৮৯ সালে আর্নল্ট কোম্পানিতে একটি উল্লেখযোগ্য অংশীদারিত্ব কিনে নেয়।
১৯৮৭ সালে লুই ভিটন এবং মোয়েট হেনেসির সঙ্গে এলভিএমএইচ গ্রুপ গঠিত হওয়ার কয়েক বছর পর, ১৯৮৯ সালে আর্নল্ট কোম্পানিতে একটি উল্লেখযোগ্য অংশীদারিত্ব কিনে নেয়।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে আর্নল্ট এলভিএমএইচকে তৈরি করেছে বিলাসবহুল শখের পণ্যের পাওয়ার হাউসে। এলভিএমএইচ শ্যাম্পেন, ওয়াইন, ফ্যাশনেবল পোশাক, চামড়ার পণ্য, ঘড়ি, গহনা, প্রসাধনী ও পারফিউমের বিস্তৃত নির্বাচন অফার করে। বর্তমানে এলভিএমএইচ এর বিশ্বব্যাপী পাঁচ হাজার ৫০০টি আউটলেট রয়েছে।
শুধু ইউরোপ নয় ১৯৯২ সালে চীনের বেইজিংয়ে লুই ভিটন শোরুম খুলে এশিয়ার সবচেয়ে বড় বাজারে তার আধিপত্য দেখান এই ইউরোপীয় টাইকুন। ব্যক্তিগত জীবনে, বার্নার্ড আর্নল্ট দুবার বিয়ে করেছিলেন। তার ৫ সন্তান রয়েছে।
ব্লুমবার্গের তথ্য অনুসারে, আর্নল্ট এর পরিবারের প্রত্যেকেই তার কোম্পানি এলভিএমএইচ বা এর যেকোনো ব্র্যান্ডের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।