মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে গতকাল শনিবার তুমুল বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ঘটনায় অন্তত ২১০ জন নিহত এবং ৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। শরণার্থীশিবিরে হামলা চালানোর পর চার জিম্মিকে মুক্ত করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে সাধারণ মানুষের বাড়িঘরে ইসরায়েলি রকেটও আঘাত হেনেছে।
অনেক নারী, শিশুসহ হতাহতদের মধ্যে গাজার দেইর আল বালাহ এলাকার আল আকসা শহীদ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ইসরায়েলি বাহিনী এ হাসপাতালের আশপাশেও গতকাল ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। সেখানেও হতাহতের খবর মিলেছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে আলজাজিরার এক সাংবাদিক জানান, সেখানে মিনিটে মিনিটে বিস্ফোরণের শব্দ শুনছেন তাঁরা।
ইসরায়েলি বাহিনী মধ্য গাজার মাঘাজি শিবিরের পূর্ব এলাকা এবং দক্ষিণ গাজার রাফা শহরের পশ্চিমে বাড়িঘরে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করেছে। মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক জানান, হতাহতদের নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স আল আকসা শহীদ হাসপাতালে আসছে। টানা হামলার কারণে হাসপাতালে ওই সাংবাদিকসহ অনেকেই আটকা পড়েছেন। হতাহতদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে বলে জানান ওই সাংবাদিক।
তিনি জানান, বাইরে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ আর হাসপাতালে রোগী আর সাধারণ মানুষের ভিড়ে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। বাইরে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা হাসপাতালের ভেতর থেকে কেউ বলতে পারছে না।
এদিকে দক্ষিণ গাজার রাফা শহরের রাস্তায় রাস্তায় লাশের ছড়াছড়ি বলে জানিয়েছেন কুয়েতি বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক। তিনি জানান, এসব মানুষ ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছে।
জাতিসংঘের কালো তালিকায় ইসরায়েল
এদিকে বিশ্বের যেসব দেশ সশস্ত্র সংঘাতের সময় শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালিয়েছে, সেই কালো তালিকায় এবার ইসরায়েলের নাম যুক্ত করেছে জাতিসংঘ।
বিশ্বসংস্থার মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেছেন, মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের চিফ অব স্টাফ গত শুক্রবার ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়টি ফোন করে জানান। ইসরায়েল এর তীব্র নিন্দা করে জাতিসংঘকে ‘পরিণতির জন্য’ সাবধান করে দিয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হাজারো শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে বহু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের বরাতে জাতিসংঘ জানায়, চলমান ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে সাত হাজার ৭৯৭ শিশু নিহত হয়েছে। গাজার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় প্রায় তিন হাজার শিশু পঙ্গুত্ববরণ করেছে।
সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি