বিদ্যার দেবী সরস্বতী। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা আজ।
মাঘ মাসে শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে এই দেবীর পূজা করা হয়। দেবী শুক্ল বর্ণ, শুভ্র হংসবাহনা, বীণা রঞ্জিত পুস্তক হস্তে অর্থাৎ একহাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক।
বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন অগণিত ভক্ত। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে প্রণতি জানাবেন তারা। সনাতন ধর্মালম্বিদের মতে দেবী সরস্বতী বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। ধর্মীয় বিধান অনুসারে সাদা রাজহাঁসে চড়ে বিদ্যা ও সুরের দেবী সরস্বতী পৃথিবীতে আসেন।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মন্দিরগুলোর অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে সারাদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় প্রতি বছরের ন্যায় এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে সাড়ম্বরে বিদ্যা ও আরাধনার দেবী সরস্বতীর পূজার আয়োজন হচ্ছে না।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জ্ঞানচর্চার মাধ্যমেই মানবসভ্যতা ক্রমান্বয়ে বিকশিত হচ্ছে। জ্ঞানার্জনে সরস্বতী দেবীর কৃপা অর্জনের লক্ষ্যেই ভক্তবৃন্দ এ পূজা করে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল থেকে এ দেশের মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে আসছে।
দেশে বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্য আরো সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।’
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে কাউকে সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেওয়া হবে না। আগামী দিনে সকল ধর্মের পারস্পরিক সম্প্রীতি আরো সুদৃঢ় হবে।’
তিনি বলেন, হাজার বছর ধরে এ ভূখন্ডে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এ দেশে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা সব ধর্মের উৎসব সকলে মিলে আনন্দ-উৎসব সহকারে উদযাপন করি।’
প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের এ সংকটময় সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পূজা উদযাপন করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।