প্রায় পাঁচ বছর পর বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়ার দুই সপ্তাহ পর ফের বন্ধ করে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। তবে ঠিক কী কারণে এভাবে হঠাৎ করে ভ্রমণপিপাসুদের ভ্রমণ অনুমতি বন্ধ করা হলো তা স্পষ্ট করেনি কিম জং উন প্রশাসন। এ অবস্থায় পিয়ংইয়ং-এর সংকটাপন্ন অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সাল থেকে অন্য দেশের নাগরিদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় উত্তর কোরিয়া। এরপর ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিধি-নিষেধ কমাতে শুরু করে দেশটি। এরই অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে রাশিয়ান পর্যটকদের জন্য নিজের দুয়ার উন্মুক্ত করে পিয়ংইয়ং।
পর্যটন খাত চাঙা করার মাধ্যমে অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গেলো ২০ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো পশ্চিমা ভ্রমণ পিপাসুদেরও প্রবেশ অনুমতি দেয় উত্তর কোরিয়া। তাও কেবল প্রত্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় শহর রাসনে ঢোকার জন্য দেয়া হয় অনুমতি। এবার দুই সপ্তাহ পর এসে সেই পথটাও বন্ধ করে দিলো কিম জং উনের দেশ।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এসব এলাকায় ভ্রমণ বাতিল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বেশ কয়েকটি পর্যটন সংস্থা। তবে কিম জং উন প্রশাসন এখনও কিছু জানায়নি। এ অবস্থায় যারা এপ্রিল ও মে মাসে উত্তর কোরিয়ায় সফরের পরিকল্পনা করছেন, তারা নিশ্চিত তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট বুকিং থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা।
উত্তর কোরিয়া ভ্রমণে নজরদারি আর তল্লাশির ভোগান্তির পাশাপাশি ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ না পাওয়ার অভিযোগ আন্তর্জাতিক ভ্রমণপিপাসুদের। ছবি বা ভিডিও করে ভ্রমণ স্মৃতিবন্দির যো নেই। তাই পর্যটকদের জন্য উত্তর কোরিয়া যতটা আগ্রহের তার চেয়েও বেশি আতঙ্কের এক নাম।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার বিদেশি পর্যটক উত্তর কোরিয়া ভ্রমণ করেছিলেন, যাদের ৯০ শতাংশ ছিলেন চীনা নাগরিক। ওই বছর অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হয়েছিলো ১৭৫ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া ২০২৪ সালে অন্য কোনো দেশের পর্যটক ভ্রমণ না করলেও অন্তত ৯শ’ রাশিয়ান পর্যটক উত্তর কোরিয়া সফর করেছেন। যা থেকে উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার আভাস মেলে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।