বিএনপির আন্দোলনে বাধা দিতে প্রধানমন্ত্রী নিষেধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, বিএনপি আন্দোলন করলে আওয়ামী লীগের কোনো অসুবিধা নেই। তবে আগুন সন্ত্রাস করলে জবাব দেয়া হবে।
রোববার সকালে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ আবারও ভোঁতা অস্ত্র ব্যবহার করছে, জঙ্গিবাদ ও অগ্নিসন্ত্রাসের কথা বলছে- বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা একেবারে ভোঁতা হয়ে গেছে এমন নয়। এখনো জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক শক্তি ছাড়া বিএনপির সভা-সমাবেশও অচল। এখনো তারা সক্রিয় এবং এই জঙ্গিবাদ বিএনপির হাতে সৃষ্টি। সাম্প্রদায়িক শক্তির তারা প্রধান পৃষ্ঠপোষক। সেটা আগেও ছিল, এখনো আছে। ভোঁতা কার্যক্রমে দেখা যাবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের কজন নেতা বিএনপির আমলে ঘরে থাকতে পেরেছে? বিএনপির সব নেতা ঘরে থাকে। এয়ার কন্ডিশনার রুমে থাকেন, বক্তৃতা করেন। আমাদের ঘরে থাকতে দেয়নি।
আমাদের দলীয় কার্যালয়ের বারান্দায় একুশে ফেব্রুয়ারির আলোচনা সভা করতে দেয়নি। ৩ দিনব্যাপী আলোচনা সভা বিএনপি বাধা দিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে। এখন তারা তাদের অফিসের সামনে বড় বড় সমাবেশ করে। প্রায় প্রতিদিনই করে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত ১৪ বছর ধরে বিএনপির আন্দোলন দেখলাম। বিভিন্ন নির্বাচনেও তাদের ভূমিকা দেখলাম। দেশবাসী কী দেখলো, তাদের নিজেদের দলের চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দয়ায়-মহানুভবতায় মুক্তি পেয়ে বাসায় আছেন। বিএনপির কোনো অবদান এখানে আছে? বিএনপি দর্শনীয়, কার্যকর একটি বিক্ষোভ সমাবেশও কি বেগম জিয়ার জন্য করতে পেরেছে?
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাদের আন্দোলন করতে দাও। কোনো প্রকার বাধা-বিঘ্ন আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করেনি। পরিবহন ধর্মঘট; পরিবহনের লোকেরা তাদের ভয় পায়, আমরা কী করবো! পরিবহনে আওয়ামী লীগও আছে, বিএনপিও আছে, জাতীয় পার্টিও আছে—সবাই আছে। মালিক সমিতির প্রেসিডেন্ট জাতীয় পার্টির, সেক্রেটারি আওয়ামী লীগের। শ্রমিক ফেডারেশনে প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগের, সেক্রেটারি বাসদ। ভাইস প্রেসিডেন্ট শিমুল বিশ্বাস, তিনি কোন দলের? তাকে প্রশ্ন করুন, পরিবহন ধর্মঘট কেন? কত ড্রাইভার-কন্ডাকটার পুড়িয়ে মেরেছে! শত শত গাড়ি ভাঙচুর করেছে। বিএনপিকে দেখলে, তারা হৈহৈ রৈরৈ শুরু করলে এরা তো ভয় পায়। আবার যদি পুরনো সন্ত্রাস ফিরে আসে! সে জন্য তারা হয়তো বন্ধ করেছে, যেটা তারা বলছে।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে নেত্রী দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে উপ-কমিটি করা হবে। আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করে না। বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টির কোনো বিষয় নেই। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন এবং অন্যান্য সম্মেলন নিয়মিত প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের সময় মিলে গেলে আমরা কী করব?
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বাইরে সমাবেশ করবেন। মাসে দুটি করে সম্মেলনে তিনি সশরীরে উপস্থিত থাকবেন। করোনার কারণে তিনি এতদিন সশরীরে যেতে পারেননি। তিনি ভার্চুয়ালে সব কাজ সম্পন্ন করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য, শাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।