বিআরটি রুট ও মেট্রোরেলের যাত্রীদের স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে আগামী বছরের মধ্যেই ৩৪০টি বৈদ্যুতিক কোরিয়ান এসি বাস কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাসগুলো কোরিয়া থেকে কেনা হবে। এছাড়া মেরামতের জন্য প্রায় ১৫ শতাংশ যন্ত্রাংশও আনা হবে দেশটি থেকে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বিআরটিসির বাস কেনার প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।
জানা গেছে, ১৪০টি ঢাকায় চলবে, বাকি ২০০টি ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলা শহরে যাত্রী পরিবহন করবে। রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগ আরামদায়ক করতে নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ।
বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত হচ্ছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)। এর একটি র্যাম্প যান চলাচলের জন্য এরই মধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট শীর্ষক এ প্রকল্পের কাজ বিস্তৃত করা হচ্ছে মহাখালী হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হয়েছে মেট্রোরেল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। প্রকল্পটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৩৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩০৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ও কোরিয়া থেকে ঋণ পাওয়া যাবে ৮২৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জুন থেকে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, এই বাসগুলোর মাধ্যমে আন্তঃনগর ও অন্তঃনগরে নির্ভরযোগ্য আরামদায়ক গণপরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। মেরামত অযোগ্য বাসগুলোকে পরিবেশবান্ধব সিএনজি বাস দ্বারা প্রতিস্থাপন করা। এর ফলে পরিবেশবান্ধব পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৪০টি সিএনজি সিঙ্গেল ডেকার এসি সিটি বাস ও ১৫ শতাংশ খুচরা যন্ত্রাংশ সম্পর্কিত পরিষেবা সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া ২০০টি সিএনজি সিঙ্গেল ডেকার এসি ইন্টারসিটি বাস ও ১৫ শতাংশ খুচরা যন্ত্রাংশ সম্পর্কিত পরিষেবা সংগ্রহ হবে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বিআরটিসি দেশে বৈদ্যুতিক বাস আমদানিতে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই প্রকল্পের ঋণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বহরে নতুন বাস যোগ হচ্ছে না। তাই সিএনজিচালিত বাস আমদানি করা হচ্ছে।
বাসের দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, বাসের দাম প্রস্তাবের চেয়ে কমও হতে পারে। উন্মুক্ত দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতার কাছ থেকে বাস কেনা হবে। বাসগুলো সাত বছর চললেই পুরো ঋণের খরচ উঠে যাবে।
এসব বাস কেনার পেছনে যুক্তি দেখিয়ে বিআরটিসি বলছে, ঢাকার ‘নগর পরিবহন’ ব্যবস্থায় বিআরটিসির কিছু নন-এসি বাস চলছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আবার প্রচণ্ড গরমে নন-এসি বাসগুলো কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাচ্ছে না। এসি বাসের স্বল্পতায় এসি প্রাইভেটকার বাড়ছে, যা যানজট ও বায়ুদূষণ বাড়াচ্ছে। তাই আরামদায়ক গণপরিবহনের নিশ্চয়তায় বিআরটিসির জন্য এসি বাস কেনা হচ্ছে।