বাস রুট রেশনালাইজেশনে আশার আলো!

এখনও আলোর মুখ দেখেনি ২০ বছরের উদ্যোগ আর চার বছরের পরিকল্পনায় শুরু হওয়া বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্প। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তৎকালীন পরিবহন নেতাদের রাজনৈতিক প্রভাবই প্রকল্প বাস্তবায়নে মূল বাধা ছিল। পটপরিবর্তনের পর সেই বাধা নেই বলে আশার আলো দেখছেন তারা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট রেগুলেটরি অথরিটি প্রতিষ্ঠা করে কাজ করতে হবে দায়বদ্ধতার সঙ্গে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা কাঠখড় পুড়িয়ে ভোগান্তিহীন যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীতে ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করা ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ প্রকল্প সফলতার মুখ দেখেনি। বরং দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যানজটের তীব্রতা বেড়ে ঢাকা হয়ে উঠেছে অসহ্য দুর্ভোগের নগরী।

অথচ যানজটের কবলে কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ায় লাভ-ক্ষতির হিসাব মিলিয়ে বাস চালকরাও আসতে চান এক ছাতার নিচে। আর নানা হয়রানি ও ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে যাত্রীদের প্রত্যাশা সড়ক হয়ে উঠুক শৃঙ্খলাপূর্ণ।

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) জানায়, তৎকালীন পরিবহন নেতাদের রাজনৈতিক প্রভাব, অবৈধ বাসের দৌরাত্ম্য, মালিকানা হারানোর ভয়ে বাস কোম্পানির অনীহা ও লেনদেনের স্বচ্ছতার অভাব ছিল প্রধান অন্তরায়। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পূর্বের কোনো বাধাই এখন আর নেই। নতুন করে দায়িত্ব পাওয়া পরিবহন নেতারাও সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

ডিটিসিএর ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ও প্রোজেক্ট ম্যানেজার ধ্রুব আলম বলেন, ‘প্রকল্পটি চালুর জন্য তৎকালীন বাস-মালিক সমিতির নেতারা ছিলেন তাদের কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পাইনি। যে উদ্যোক্তারা আবেদন করেছিলেন তাদেরও অনেক হয়রানি করা হয়েছিল।’

প্রত্যেক কোম্পানির মালিককে ডেকে আলোচনার মাধ্যমে প্রকল্পটির চালুর ব্যপারে আমরা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম।

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবার ছাড় দিতে নারাজ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন, ‘আর নয় নৈরাজ্য, ফিটনেস না থাকলে মিলবে না লাইসেন্স। চলতি মাসের পর আমরা আর পুরোনো গাড়ি রাখবো না।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন বাস্তবায়ন করতে হলে মেট্রো কিংবা বিআরটির মতো একটা রেগুলাটরি অথোরিটি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা প্রতিনিয়ত সেবার মানদণ্ড পর্যবেক্ষণ করবে।’

ড. সামছুল হক আরও বলেন, ‘দেশের সংস্কৃতি কম বিনিয়োগের প্রকল্পে আগ্রহ কম, তাই এখনই মোক্ষম সময় উদ্যোগ নেওয়ার। অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে এ স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।’

Comments (0)
Add Comment