বায়না দলিল কী, এর মেয়াদ কতদিন?

জমি কেনা কিংবা বিক্রির সময় আমরা শুরুতেই বায়না করে থাকি। কারণ ভবিষ্যতে বিক্রেতা যেন অন্য কারও কাছে জমি বিক্রি করতে না পারে, সে নিশ্চয়তা এবং ক্রেতা নির্ধারিত সময়ে বাকি অর্থ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন—বায়না দলিলের মেয়াদ কতদিন থাকে এবং এটি রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক কিনা? এ বিষয়ে শুরুতেই আমাদের জেনে নেওয়া উচিত—

বায়না দলিল কী?

বায়না দলিল হচ্ছে— জমি কেনার উদ্দেশ্যে বিক্রেতাকে মোট টাকার একটি অংশ অগ্রিম প্রদান করে যে লিখিত চুক্তি করা হয়, তাকে বায়না দলিল কিংবা বায়নাপত্র বলা হয়ে থাকে। এই দলিলের ভিত্তিতেই পরে মূল রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদিত হয়ে থাকে। এটি দুই পক্ষের জন্যই আইনি সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে থাকে।

বায়না দলিল অবশ্যই লিখিত হতে হবে এবং সাক্ষীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষর করতে হবে। আর দলিলের একটি অনুলিপি উভয়পক্ষ নিজের কাছে রাখবেন। সেই সঙ্গে চুক্তিতে জমির সঠিক বিবরণ, পরিমাণ, বায়নার অংক, সময়সীমা ও বাকি অর্থ পরিশোধের দিন উল্লেখ থাকা উচিত।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে— বায়না দলিলের মেয়াদ কতদিন? বর্তমান আইনে বায়না দলিলের নির্দিষ্ট মেয়াদ বাধ্যতামূলক নয়। তবে সাধারণত ছয় মাসের মধ্যে মূল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার প্রথা প্রচলিত আছে। আর উভয় পক্ষ চাইলে চুক্তিভিত্তিক সময়সীমা নির্ধারণ করে নিতে পারেন। এবং প্রয়োজনে চুক্তির মাধ্যমে মেয়াদ এক বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। তবে সময়সীমা শেষ হলে আবার নতুন করে বায়না দলিল বা সমঝোতা চুক্তি করা যেতে পারে। আর একপক্ষ যদি মেয়াদ বাড়াতে না চায়, তাহলে আইনগতভাবে অপর পক্ষ মামলা করতে পারেন। সে জন্য আদালতে যাওয়ার আগে আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এবার প্রশ্ন আসছে— বায়না দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক কিনা? আইন অনুযায়ী, বায়না দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়। তবে রেজিস্ট্রেশন করলে দলিলটি ভবিষ্যতে আদালতে প্রমাণ হিসেবে আরও শক্তিশালী হয়। সে কারণে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বায়না করলেও সেটি আইনি দলিল হিসেবে গণ্য হয়। তবে সেটি প্রমাণ করতে বেশি কাগজপত্র ও সাক্ষ্য দরকার হয়।

জেনে নিন বায়না দলিল রেজিস্ট্রেশনের খরচ কত?

বায়না দলিল রেজিস্ট্রেশনের খরচ নির্ভর করে আপনার জমির মূল্যের ওপর। সাধারণত ২০০-৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে বায়না দলিল লেখা হয়। আর রেজিস্ট্রেশন করতে চাইলে ১ শতাংশের মতো রেজিস্ট্রেশন ফি ও অন্যান্য খরচ ধরতে হয়। এ জন্য নির্দিষ্ট খরচ জানতে স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যোগাযোগ করা উচিত।