বাংলাদেশের মানুষের টিকে থাকা ও উন্নতি করা খুবই কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ একটি ব-দ্বীপ অঞ্চল। এখানকার মানুষের টিকে থাকা ও উন্নতি করা খুবই কঠিন একটা কাজ। অনবরত প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হয়।
সোমবার আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের বৃক্ষরোপণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এবং সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী।
শেখ হাসিনা বলেন, বদ্বীপকে বাঁচাতে হলে প্রচুর বৃক্ষরোপণ করতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রচুর বৃক্ষরোপণ করেছেন এবং দলের নেতাকর্মীদের বৃক্ষরোপণ করতে বলেছেন। যে কারণে আমাদের এই বাংলাদেশ একসময় সবুজ বৃক্ষভরা ছিল। এমনকি ঢাকা শহর বড় বড় গাছে ঢাকা ছিল। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বাংলা একাডেমি হয়ে সেগুনবাগিচা, হাইকোর্ট পর্যন্ত বড় বড় গাছ এবং কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। ’৭৫ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি হন, তখন এ সব বৃক্ষ কেটে ফেলা হয়। এ কারণে পরিবেশের ভীষণ ক্ষতি হয়ে যায়।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গাছ লাগাতে আমাদের সবাইকে ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য ’৮৪ সাল থেকে আমরা পহেলা আষাঢ় বৃক্ষরোপণ দিবস পালন করে আসছি। কৃষক লীগের নেতৃত্বে প্রতি বছরই আমরা এই দিনে বৃক্ষরোপণ করি। প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হলে গাছ দরকার। আমরা পুরো বাংলাদেশকে যদি সবুজ বেষ্টনীতে গড়ে তুলতে পারি তাহলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবো।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব আজ স্তব্ধ হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে এই করোনায়। করোনার অনেকগুলো খারাপ দিক থাকলেও এর মধ্যে ভালো কিছু দিকও আমরা লক্ষ্য করছি। যেমন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে। প্রকৃতি যেন হেসে-খেলে উঠেছে। ফুলে ফলে ভরে গেছে প্রকৃতি। পরিষ্কার হয়ে গেছে নদী সাগর আকাশ। এগুলো ভালো একটা দিক। কিন্তু করোনা আমাদের জীবন কেড়ে নিক এটা আমরা আর দেখতে চাই না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুর বিষয়টি টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এমন দুর্ভাগ্য যে তিনদিনে আমরা তিনজন নেতাকে হারালাম। আর যেন কাউকে না হারাতে হয় সেজন্য দলের নেতাকর্মীসহ সারা দেশের মানুষকে সাবধানে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে।