সাময়িক বন্ধের ঘোষণা থাকলেও বছর পার হয়েও চালু হয়নি উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন। ফলে ভোগান্তিতে ব্যবসায়ী ও যাত্রীরা। ট্রেন ও টিকিট স্বল্পতায় ব্যাহত হচ্ছে, উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নাশকতার আশঙ্কায় সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল উত্তরা এক্সপ্রেস। কিন্তু এক বছর পার হলেও চালু হয়নি উত্তর ও দক্ষিণের হাজারো মানুষের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এই ট্রেন।
ট্রেনটি রাজশাহী-পার্বতীপুর রুটে যুক্ত করেছিল উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলা। স্বল্প খরচে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহনে ট্রেনটি ছিল ভরসার নাম। কিন্তু এখন স্টেশনগুলোতে শুনশান নীরবতা, লাইনে জমেছে আবর্জনা।
স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘ট্রেন না থাকায় আমাদের অন্য যানবাহনে যাতায়াত করতে হচ্ছে, এতে খরচ অনেক বেশি হচ্ছে।’
একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আক্কেলপুর ও শান্তাহার থেকে আমাদের ব্যবসার কাঁচামাল আনতে হয়, সেগুলো এখন আসছে না। এতে আমাদের ব্যবসায় প্রভাব পড়ছে।’
বিভিন্ন সময় উত্তরা এক্সপ্রেস চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যাত্রীরা। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি রেল কর্তৃপক্ষের। ভুক্তভোগীরা জানান, ট্রেনটি ৩৬টি স্টেশনে যাত্রা বিরতি দিতো, এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবিধা হতো স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ীদের। শিগগিরই ট্রেনটি চালু না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
উত্তরা বাঁচাও-উত্তরবঙ্গ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি ড. মো: জিয়াউল হক বলেন, ‘অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এখানে কাঁচামাল এনে কেনা-বেচা করতো, কিন্তু এখন সেটা সম্ভব হচ্ছে না। এতে ব্যবসায়ীদের বেচাকেনায় ধস নেমেছে। উত্তরবঙ্গ থেকে যে সবজিগুলো আসতো, সেগুলো না আসায় আমাদের এখন শাকসবজি উচ্চমূল্যে কিনতে হচ্ছে। ’
এদিকে মাত্র দুটি ট্রেন ‘রূপসা ও সীমান্ত’ দিয়ে চলছে উত্তর-দক্ষিণের রেল যোগাযোগ। নাটোর স্টেশনে প্রতিদিন তিনশো’র বেশি টিকিটের চাহিদা থাকলেও মিলছে অর্ধেকেরও কম। ফলে ট্রেনের স্বল্পতা দক্ষিণের যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে বহুগুণে।
নাটোর রেল স্টেশনের সাবেক স্টেশন মাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘এখানে দিনে ২টা ট্রেন চলে, যা খুলনা স্টেশনের জন্য অপ্রতুল। আমরা বহুদিন যাবৎ এখানে আরেকটা ট্রেন যুক্ত করার জন্য চেষ্টা করছি।’
আপাতত জনবল সংকটে উত্তরা এক্সপ্রেস চালু না করার সিদ্ধান্তে অটুট পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। এছাড়া দক্ষিণের জেলা খুলনার সাথে ট্রেন যোগাযোগ বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। তবে সকল বাধা দুর করে উত্তরা এক্সপ্রেস চালু এবং খুলনা রুটে ট্রেনের সংখ্যার পাশাপাশি টিকিট বৃদ্ধির দাবি যাত্রীদের।