বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার হেক্টর চাষযোগ্য জমি রূপান্তরিত হচ্ছে এবং অকৃষি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের মতে, জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং চাষযোগ্য জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। ভবিষ্যতে এটি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের কারণ হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্রপস উইংয়ের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) পরিচালক মো. শওকত ওসমান বলেন, ‘অনেকে চাষযোগ্য জমিতে ঘরবাড়ি, ইটভাটাসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এটি দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা পূরণের সক্ষমতার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।’
শামীম ওসমান জানান, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। অঞ্চলভিত্তিক কৃষি উৎপাদন সংগঠিত করতে প্রথম পর্যায়ে দুই কোটি কৃষককে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে জৈব সার ব্যবহারের মাধ্যমে আটটি নির্দিষ্ট ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
‘যে খাবার খাওয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণ নিরাপদ কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এসব বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি,’ যোগ করেন তিনি।
নাজিম আরও বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশে উৎপাদন পর্যায়ে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, দেশে ভোক্তাদের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অপারেশন ও ল্যাবরেটরি বিভাগের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। এখানে রাজনৈতিক অঙ্গীকার অপরিহার্য।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, কৃষকদের যথাযথ জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ থাকা অপরিহার্য। রেস্টুরেন্ট কর্মী ও মালিকদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাশাপাশি অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করতে হবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে জনবল নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ৬০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত পুরো ময়মনসিংহ অঞ্চলের জন্য মাত্র একজন কর্মকর্তা রয়েছেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে ৮৮ লাখ ২৯ হাজার হেক্টর চাষযোগ্য জমি ছিল।