আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে ।আপনাদের সহযোগিতা পেলে আইনটি পাস করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা কোনো প্রতিহিংসার জন্য নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করবো না, বাঙালি ও নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্যই এই কমিশন গঠন করা হবে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে আখাউড়া রেলস্টেশন চত্বরে আখাউড়া উপজেলা, পৌর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় আইনমন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, তার পরিবারের ১৭ জনকে নিমর্মভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এই হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে হত্যা করা। ষড়যন্ত্রকারী ও খুনিরা জানতো বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে বাংলাদেশকে হত্যা করা যাবে। যারা বাংলাদেশকে চায়নি, একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশে না থাকলে তাদেরকে আমরা আজ জীবিত পেতাম না।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দুজন খুনির একজন যুক্তরাষ্ট্রে, আরেকজন কানাডায় অবস্থান করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে যিনি আছেন তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জোর আলোচনা চলছে। তবে কানাডার আইনে আছে সে দেশে অবস্থানকারী কারো অন্য দেশে মৃত্যুদণ্ড হলে তাকে ফেরত দেয় না। যতক্ষণ পর্যন্ত বাকি খুনিদের দেশে ফেরত এনে বিচারের রায় পরিপূর্ণভাবে কার্যকর না করা যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁদেরকে ফেরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি জামায়াতের ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু বসে নেই। কারণ তারা মিথ্যা বলেন। সত্যের কাছ দিয়ে হাঁটেন না। বিএনপি এত মিথ্যাবাদী তারা নিজেরা খুন করে অন্যের ওপর দায় চাপান। তাই ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের। এজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে কখনো হত্যা করা যায় না। তিনি সবসময় বাঙালির মনে জীবিত আছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদের স্মৃতিতে স্থানীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আইনমন্ত্রী।
মন্ত্রীর নিজ নির্বাচনী এলাকা আ্খাউড়ার এডভোকেট সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. মনির হোসেন বাবুল ও একেএম আতাউড় রহমান নাজিম, ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু সহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ, দর্শন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।