বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরে দর্শনার্থীদের ভীড়

বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনগাঁথা নিয়ে জয়পুরহাটের রেলের বগিতে সাজানো নান্দনিক ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পরা ভীড় দেখা গেছে।

এই জাদুঘরের মাধ্যমে ১৯২০ সাল হতে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জীবনে ঘটে যাওয়া নানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

এই জাদুঘরটি দেশের বিভিন্ন স্টেশনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই জাদুঘরটি এবার রাখা হয়েছে জয়পুরহাট স্টেশনের তিন নম্বর লাইনে। রেল জাদুঘরটি মুগ্ধ হয়ে দেখছেন দর্শনার্থীরা।

দর্শনার্থীরা জানান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেলের বগির ভেতরে ১২টি গ্যালারি রয়েছে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, স্বাধীনতার ঘোষণা, মুজিবনগর সরকার, মুক্তিযুদ্ধ ও ১৬ ডিসেম্বরের মহান বিজয়সহ নানা ইতিহাস।

জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চশমা, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় তামাক পাইপ, মুজিব কোট, বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থল, কমলাপুরের ৭১ এর বিজয়স্তম্ভ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, মুজিব শতবর্ষের লোগো, বঙ্গবন্ধুর লেখা বই, মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ, পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণসহ নানা ছবি শোভা পাচ্ছে। ছবির পাশাপাশি ভিডিও চিত্রেও প্রদর্শিত হচ্ছে নানা বিষয়। অডিও এর মাধ্যমে সম্প্রচারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ জীবনী।

এই জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনগাঁথা জানার চেষ্টা করছিল চৌদ্দ বছর বয়সী লেখা পড়া না জানা কিশোর জোবায়ের হোসেন তাহসান। তার মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজন বলতে কেউ নেই। নেই থাকার জায়গাও। জয়পুরহাট স্টেশনেই থাকে। ওই কিশোরটি জানায় ছবিগুলো দেখে, অডিও শুনে আর ভিডিও দেখে অনেক কিছু জানার চেষ্টা করছে। জেনেছে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছুই। তার খুব ভাল লাগছে এই আয়োজন।

কলেজ ছাত্র নিশাত হোসেন বলেন, ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি দেখে মুক্তিযুদ্ধের আগে এবং পরের বঙ্গবন্ধুর জীবনী সম্পর্কে জানলাম। অনেক অজানা বিষয়ও জানা হলো।

এই জাদুঘর দেখাতে আসা গৃহিণী নাদিরা বেগম বলেন, এই জাদুঘরে ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছেলেদের নিয়ে রেল জাদুঘর পুরোটা ঘুরে দেখেলাম। ছেলে-মেয়েদেরে দেখালাম।

রেল জাদুঘরের দায়িত্বরত আমজাদ হোসেন বলেন, এটি গোপালগঞ্জ স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। এখন দেশের বিভিন্ন স্টেশনে কয়েকদিন করে রাখা হচ্ছে। জয়পুরহাট স্টেশনে দুই দিন থাকবে।

এটি শিক্ষার্থী ও সর্বসাধারণের জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।