তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির এ সময়ে মানুষ যেমন সুফল পাচ্ছে তেমনই সাইবার জগতে নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেরও শিকার হতে হয়। সাইবার অপরাধীরা নানাবিধ নতুন পন্থা অবলম্বন করে অপরাধের জাল বিস্তার করেই যাচ্ছে। সুরক্ষিত নেই কোনো মাধ্যমই। ফেসবুক থেকে হোয়াটসঅ্যাপ এমনলি জি-মেইল, ইনস্টাগ্রামসহ সব জায়গাতেই তাদের বিচরণ। প্রায়ই শোনা যায় বিভিন্ন লিঙ্ক পাঠিয়ে ফোন হ্যাক করে হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
হোয়াটসঅ্যাপ জি-মেইল থেকে শুরু করে ফেসবুক, ফিশিং স্ক্যামের জন্য আর কোনো প্ল্যাটফরম বাকি রাখেনি স্ক্যামাররা। এক একটা আক্রমণ ধরা পড়ার পর যখন মানুষজন সতর্ক হবেন, আর একটা নতুন স্ক্যামিং পদ্ধতি নিয়ে আসবে জালিয়াতরা।
বর্তমানে মেটার মালিকানাধিন মেসেজিং প্লাটফরম হোয়াটস অ্যাপে ও মেসেঞ্জারে মেসেজের মাধ্যমেই চলছে স্ক্যামিং। বহু ব্যবহারকারীর কাছে একটি নির্দিষ্ট মেসেজ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর তার নিচেই থাকছে একটি লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে ক্লিক করেই বিপদ ডেকে আনছেন ব্যবহারকারীরা।
হঠাৎ হোয়াটসঅ্যাপে পরিচিত কোন বন্ধুর নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে, দেখে স্বাভাবিকভাবেই মেসেজটি খুলবেন যেখানে লেখা রয়েছে “Aarong 35th Anniversary Celebration! Through the questionnaire, you will have a chance to get 5000 taka”। এ ধরনের একটি ক্যাম্পেইনের লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফ্যাক্টচেকারে চেক করে দেখা যায়, আড়ং কোম্পানি এ ধরনের কোনো ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেনি এবং কোম্পানিটির বয়স ৩৫ বছর নয় বরং গত ডিসেম্বরে কোম্পানিটির ৪৩ বছর পূর্ণ হয়েছে।
যে ডোমেইনগুলো ব্যবহার করে ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করা হচ্ছে সেটা মূলত আড়ং কোম্পানির মূল ওয়েবসাইট নকল করে তৈরি করা।
এ ছাড়া মেসেঞ্জারে আরেকটি লিঙ্ক স্ক্যামাররা পাঠাচ্ছে যাতে লেখা “লুক হোয়াট আই ফাউন্ড”। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেসেজটি সামান্য হলে কী হবে, ব্যবহারকারীদের বড়সড় ক্ষতি হতে পারে। লিঙ্কে ক্লিক করলে ইউজারদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একটি ওয়েব পেজে। সেই ওয়েব পেজে ফেসবুক ব্যবহারকারীকে বলা হচ্ছে, তার লগইন ক্রেডেনশিয়ালস দিতে অর্থাৎ ফেসবুকের লগইন আইডি, পাসওয়ার্ড এগুলো দিয়ে দিতে।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এ ধরনের স্ক্যাম বাঁ ফিশিং নতুন নয় তবে স্ক্যামারদের পন্থা একেক সময় ভিন্নি ভিন্ন হয়ে থাকে। বরাবরের মতোই ব্যবহারকারিদের এসব লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। ব্যবহারকারীরা সচেতন হলেই লক্ষ্য করবেন ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আড়ং এর প্রশ্নপত্র ইভেন্টে উত্তর দিয়ে ৫ হাজার টাকা জেতার ক্যাম্পেইনটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং ভুয়া। কেননা আড়ংয়ের বয়স ৩৫ বছর নয় বরং কোম্পানিটির ৪৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। বলছিলেন সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ নাজমুস সাকিব।