আনোয়ারুল আজীম আনার। ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য। স্থানীয় জনগণের প্রিয় ব্যক্তিত্ব আনার টানা তিনবার আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মধুগঞ্জ বাজার এলাকার মৃত ইয়াকুব বিশ্বাসের ছেলে আনার।
১৯৬৮ সালের ৩ মে জন্ম হয় তাঁর। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ভাইদের মধ্যে সবার ছোট।
তুখোড় ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে স্কুলজীবনেই আনারের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। আশির দশকে সেই খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে জেলা থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে।
এলাকায় জনপ্রিয় হওয়ায় জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন সামাজিক কাজে। সেই জনপ্রিয়তা থেকে ১৯৯৩ সালে প্রথম কালীগঞ্জ পৌরসভার কমিশনার নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০০৯ সালে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হন।
এ ছাড়া তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি নির্বাচিত হন।
কালীগঞ্জ সরকারি মহাতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক সুব্রত নন্দী বলেন, ‘আনোয়ারুল আজীম আনার আমাদের জন্য শুধু সংসদ সদস্য ছিলেন না, বন্ধুর মতো ছিলেন। খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির মাঠেও তিনি আমাদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করেছেন। গণমানুষের উন্নয়নে সব সময় এগিয়ে আসতেন তিনি।’
আরপাড়া গ্রামের মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় আমরা সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া পেতাম না।
কিন্তু তিনি (আনার) সংসদ সদস্য হওয়ার পর আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করেছেন।’
কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি ছিলেন সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। দীর্ঘ ১০ বছর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও সামাজিক কাজের জন্য তিনি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এমপি নির্বাচিত হলেও তিনি এলাকায় কখনো প্রটোকল নিয়ে চলাফেরা করতেন না।’
নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়ে তিনি মানুষের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা শুনে তা সমাধান করতেন। কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তিনি ওই বাড়িতে গিয়ে শোকার্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতেন।’
এমপি আনার নিখোঁজের পর থেকেই নানা রকম গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা আবু জাফর জানান, তিনি ভারতে একা একা যাওয়ায় সবার মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। অনেকের ধারণা চোরাকারবারিদের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রতিপক্ষরাও ভারতে চোরাকারবারিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রলোভন দেখিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।