ফিতনা থেকে বাঁচতে জুমার দিনে যে আমল করবেন

জুমাবার হলো সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। পবিত্র কুরআনে জুমা নামে স্বতন্ত্র একটি সুরাও রয়েছে। যেখানে মহান এই দিনের তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। অন্যদিকে পবিত্র এই দিনে হযরত আদম আ. কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিয়ামতও হবে জুমাবারেই।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- সূর্য উদয়ের দিবসগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমাবার। সে দিনে আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়। তাকে ওইদিন জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। তাকে তা থেকে ওইদিন বের করা হয়। আর কিয়ামতও হবে জুমার দিনেই। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৫০)

এজন্য পবিত্র এই দিনে জুমার নামাজ আদায়ের পাশাপাশি বেশি বেশি আমল করার কথা হাদিসে এসেছে। সেই সঙ্গে এই দিনে নবীজির (সা.) ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠের কথাও এসেছে। আওস ইবনু আওস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, তোমাদের দিনসমূহের মধ্যে জুমাবার সর্বোত্তম। এই দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে আদম (সা.)-কে। এই দিনেই মারা গেছেন তিনি। এই দিনে ফুঁ দেয়া হবে শিঙ্গায়। সব সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে এই দিনে। অতএব এই দিনে তোমরা আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কারণ, তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হবে। (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১০৪৭)

 

তবে ছোট্ট একটি আমল রয়েছে, জুমাবারে যেটি করলে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা মিলবে। আমলটি হলো- জুমাবারে সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করা। আবু সা’ঈদ আল্ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা আল-কাহাফ পড়বে, তার (ঈমানের) নূর এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (মেশকাত, হাদিস: ২১৭৫)

আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি সুরা আল কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, তাকে দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখা হবে। (মেশকাত, হাদিস: ২১২৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭৬৮)

সুতরাং, জুমাবারে সুরা কাহাফ তিলাওয়াতের আমলটি করলে হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী অন্যান্য ফজিলতের সঙ্গে দাজ্জালের ফিতনা থেকেও রক্ষা মিলবে।

 

মনে রাখতে হবে, কিয়ামতের আগে মানুষ যেসব ভয়াবহ বিপদ ও পরীক্ষার সম্মুখীন হবে তারমধ্যে দাজ্জালের ফিতনা অন্যতম। খোদ নবীজিও (সা.) উম্মতদের দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চেয়ে মহান রবের দরবারে দোয়া করার কথা বলেছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমাদের কেউ সালাতের শেষে শেষ তাশাহুদ পড়ে অবসর হয়ে যেন আল্লাহর কাছে ৪টি জিনিস থেকে পানাহ চায়। এই ৪টি বিষয় হলো- জাহান্নামের আযাব, কবরের আযাব, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা এবং মাসীহুদ্ দাজ্জালের অনিষ্ট (দাজ্জালের ফিতনা)। (মেশকাত, হাদিস: ৯৪০; আবু দাউদ, হাদিস: ৯৮৩)