ফল পাল্টাতে জর্জিয়া গভর্নরকে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প

নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প’কে চাপ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ধারাবাহিক টুইটে গভর্নরকে নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতে রাজ্যের আইন পরিষদে বিশেষ অধিবেশন ডাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। আসন্ন সিনেট উপনির্বাচনে জর্জিয়ায় প্রচারণা সভায় ট্রাম্প যোগ দেয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এমন চাপ সৃষ্টি করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরো বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনও পরাজয় স্বীকার করেননি। উল্টো কোনো প্রমাণ ছাড়া তিনি অভিযোগ করে যাচ্ছেন, জো বাইডেন জিতেছেন ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে। এটুকু বলেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। তিনি বেশ কয়েকটি রাজ্যে আইনি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বা মামলা করেছেন।

কিন্তু এখন পর্যন্ত তার মধ্যে প্রায় সবটাতে তিনি পরাজিত হয়েছেন। জর্জিয়াতে জো বাইডেন সামান্য ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। এই রাজ্যটি ১৯৯২ সালে দখলে চলে যায় রিপাবলিকানদের। তারপর থেকে এখানে আর কোনো ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিজয়ী হননি। রিপাবলিকানদের সেই দুর্গে এবার হানা দিয়েছেন জো বাইডেন। তিনি সেখানে বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু কিছুতেই সেই বিজয় মানবেন না ট্রাম্প। তার দাবি, ভোটে জালিয়াতি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ। এখন চলছে উচ্চকক্ষ সিনেট রাজনৈতিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন নিয়ে লড়াই। জর্জিয়াতে জানুয়ারিতে দুটি আসনে উপনির্বাচন। সেই নির্বাচনে ডেমোক্রেটরা যদি বিজয়ী হতে পারে তাহলে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ হারাবে রিপাবলিকানরা। প্রশাসন চালাতে বা কোনো বিল পাস করাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনকে ততোটা বেগ পেতে হবে না।
ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, জর্জিয়ার গভর্নর কেম্প’কে শনিবার সকালে ফোন করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তিনি সেখানে ‘অ্যাবসেন্টি ব্যালট সিগনেচার’-এ অডিট দাবি করার জন্য তার ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু এমন অডিট করার নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতা নেই কেম্পের। তিনি প্রেসিডেন্টের ওই নির্দেশ পালনে অপারগ হন। এরপর তিনি টুইটারের আশ্রয় নেন। তাতে তিনি গভর্নরকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, জর্জিয়াতে আমি সহজেই এবং দ্রুততার সঙ্গে বিজয়ী হতাম, যদি গভর্নর ব্রায়ান কেম্প অথবা সেক্রেটারি অব স্টেট সিগনেচার ভেরিভিকেশন অনুমোদন করতেন। এই দুই রিপাবলিকান কেন ‘না’ বলছেন?

জবাবে কেম্প টুইটে বলেছেন, সরকারিভাবে তিনি তিনবার অডিট আহ্বান করেছেন। এর জবাবে আবার ট্রাম্প বলেছেন, আপনি যা বলছেন আপনার লোকেরা তা প্রত্যাখ্যান করছে। কেন তারা এই লুকোচুরি খেলছে? কমপক্ষে অতি দ্রুত লেজিসলেচারের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করুন। আপনি সহজেই এবং অবিলম্বে তা করতে পারেন।

পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরে প্রথম এই সিনেট উপনির্বাচনে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি কেম্পের কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, গভর্নরকে অনেক কঠোর হতে হবে। ওদিকে জর্জিয়ায় প্রায় দু’ঘন্টা বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। সেখানে সমবেত জনতাকে তিনি বলেন, এখনও তিনি নির্বাচনে জিততে পারেন। তিনি সেই অপ্রমাণিত অভিযোগ উত্থাপন করে আবারো বলেন, তারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতারণা করেছে এবং জালিয়াতি করেছে। কিন্তু আমরা জিতবো।

Comments (0)
Add Comment