প্রশাসন সংস্কারে জোর প্রশিক্ষণ ও মেধায়

প্রশাসনে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন ও বদলির সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি আমলাতন্ত্রকে জনমুখী করতে সুপারিশ করা হবে।

গণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন গড়তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে গত ৩ অক্টোবর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে এ কমিশন।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চার বিভাগ, ছয় জেলা ও চার উপজেলা সফর করে অংশীজনদের মতামত নিতে ২০টির বেশি সভা করেছে কমিশন। এ ছাড়া সংস্কার নিয়ে এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষের কাছ থেকে অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মতামত এসেছে। অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছে সংস্কার কমিশন।

জানা গেছে, জনপ্রশাসনে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন ও বদলির সুপারিশ করা হবে। এ ক্ষেত্রে তদবির ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধে সুপারিশ থাকবে। এ ছাড়া দুর্নীতি বন্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিভিন্ন সুপারিশও থাকবে। কোনো কর্মকর্তা অনিয়ম করলে যেন শাস্তি পান, সে বিষয়েও সুপারিশ থাকবে। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়েও জোর দিচ্ছে কমিশন।

রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিক না হলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। কারণ সংস্কার অনেক সময়ের ব্যাপার। তা রাজনৈতিক সরকারগুলোকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।

আরও জানা গেছে, সরকারি সেবা সহজ করতে প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণে গুরুত্ব দিচ্ছে সংস্কার কমিশন। জনগণকে ছোট ছোট কাজে আর যেন সচিবালয়ে যেতে না হয় সে বিষয়েও সুপারিশ করা হবে। এছাড়া আমলাতন্ত্রকে জনমুখী করতে নানা দিক নির্দেশনামূলক সুপারিশ থাকবে।

উপসচিব ও যুগ্মসচিব পদে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি এবং উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ সুপারিশ করা হবে বলে কমিশন প্রধান আগে যে তথ্য দিয়েছিলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তা বাদ যেতে পারে।

নাম প্রকাশ না করে কমিশনের একজন সদস্য বলেন, আমরা চাই মেধার ভিত্তিতেই পদোন্নতি, পদায়ন ও বদলি হোক। তদবির ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হোক। দুর্নীতি রোধে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিবেদনে সুপারিশ থাকবে। অতীতে দেখা গেছে, বড় বড় অনিয়মেও অনেক কর্মকর্তা শাস্তি পাননি বা কম পেয়েছেন। শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়েও জোর দেওয়া হচ্ছে।

ওই সদস্য আরও বলেন, আমরা প্রতিবেদনে যত সুপারিশ করি না কেন- রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিক না হলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। কারণ সংস্কার অনেক সময়ের ব্যাপার। তা রাজনৈতিক সরকারগুলোকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। কমিশনের প্রতিবেদন জমা দিলেই এ বিষয়ে জানা যাবে।

Comments (0)
Add Comment