জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে হোটেল লোটে প্যালেস নিউইয়র্ক মিটিং রুমে ফিলিপো গ্রান্ডির সঙ্গে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় প্রধানমন্ত্রীর।
এর আগে ব্রিটেনের প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগদান শেষে সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সময় সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিবের শিক্ষা রূপান্তর সম্মেলনে প্রচারিত রেকর্ড বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার আগামী বছর একটি নতুন জাতীয় পাঠ্যক্রম চালু করবে। বাংলাদেশি শিশুদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য উপযুক্ত বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই এই পাঠ্যক্রমের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের শিশুদের প্রকৃত বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আগামী বছর থেকে আমরা নতুন জাতীয় পাঠ্যক্রম প্রবর্তন করছি। নতুন এই পাঠ্যক্রম আমাদের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করবে।
তিনি বলেন, এই পাঠ্যক্রম শিশুদের জলবায়ু সহিষ্ণু হতে সচেতন করবে এবং বাংলাদেশকে উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে ভিশন-২০৪১-এর প্রকৃত এজেন্টে পরিণত করবে।
উচ্চশিক্ষার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা গবেষণা ও উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষার জন্য আমরা ভালো শিল্প সংযুক্তির পরিকল্পনা করছি। বাংলাদেশি শিশুদের দক্ষতা থাকবে, ফলে তারা বিশ্বের যেকোনো স্থানে কাজ করতে পারবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজন যোগ্যতার দ্বিপক্ষীয় স্বীকৃতির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। আমরা মৌলিক এবং আজীবন শিক্ষার প্রাপ্যতা উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বহু ভাষায় শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কয়েকটি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠ্যবই প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নেওয়া কয়েক লাখ শিশুকে তাদের ভাষায় শিক্ষাদান করছি।
মানসম্মত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার শিক্ষকদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা দিচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাজেটে শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
শিক্ষা রূপান্তর সম্মেলন আয়োজনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই সম্মেলন কর্মক্ষেত্রে আগামীর পরিবর্তন সম্পর্কে চিন্তাভাবনার নতুন উপায় চিহ্নিত করবে।