রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে নির্মিত শহীদ মিনারকে ‘দেশের প্রথম’ শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি (আরসিআরইউ) কার্যালয়ে দেয়ালিকা উন্মোচনপূর্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি তোলেন।
একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে ‘সত্যের কলমে একুশের প্রতিচ্ছবি’ শীর্ষক এ দেয়ালিকা প্রকাশ করে আরসিআরইউ। অনুষ্ঠানে দেয়ালিকায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সেরা তিনজনের হাতে অটোগ্রাফযুক্ত পুরস্কার তুলে দেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি।
অনুষ্ঠানে আখুঞ্জি বলেন, ‘দেশের প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ রাজশাহীতে নির্মিত হয়েছিল। আমরা কয়েকজন রাজশাহী কলেজের মুসলিম হোস্টেলে ভাষাশহীদদের স্মরণে এই স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করি।’
মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি আরও বলেন, ‘সে সময় ঢাকা থেকে ট্রেনে আসা এক কর্মীর কাছে জানতে পারি, ঢাকায় ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। যেখানে রফিক, সালাম, বরকতসহ অনেকে শহীদ হন। তখন রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা একত্রে শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে নির্মাণের পরপরই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তা ভেঙে দিয়েছিল।’
ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে ভাষাসৈনিক আখুঞ্জি বলেন, ‘তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার বাঙালিদের তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করত। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। আমরা স্বাধীনতা অর্জনের পরও প্রকৃত স্বাধীনতা পাইনি, বরং পেয়েছি বাক্স্বাধীনতা হরণকারী স্বৈরাচারী সরকার। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্ররা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতাকে ধরে রাখতে হবে, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। মাতৃভাষা বাংলাকে গুরুত্ব দিতে হবে, পাশাপাশি বিশ্ব দরবারে টিকে থাকতে ইংরেজিতেও দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্য দেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. ইব্রাহিম আলী, আরসিআরইউর উপদেষ্টা ড. মো. সৈয়দ আলী আহসান, আজমত আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ওয়ালিউর রহমান বাবু প্রমুখ।