পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরি মারা গেছেন। গতকাল বুধবার মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। ১৯৯০-এর দশকে ফুজিমোরি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে দেশকে পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু পরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জেলে ছিলেন তিনি।
১৬ বছর কারাওভোগ করেছিলেন তিনি।
ফুজিমোরি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। তার মেয়ে কেইকো ফুজিমোরি এক্সে একটি বার্তায় লিখেছেন, ‘ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধের পর আমাদের বাবা… এইমাত্র প্রভুর সঙ্গে দেখা করতে চলে গেছেন।’ পোস্টটিতে সাবেক এই নেতার অন্য সন্তানদের স্বাক্ষরও ছিল।
ফুজিমোরি জাপানি অভিবাসীর সন্তান ছিলেন। ফুজিমোরি একজন সাবেক কৃষি প্রকৌশলী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তিনি দ্রুত নিজেকে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পেরুর ক্ষমতায় ছিলেন ফুজিমোরি।
ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার জন্য তিনি সমালোচকদের কটাক্ষের মুখে পড়েছিলেন।
তিনি দেশের অর্থনীতি থেকে হাইপারইনফ্লেশন মুছে ফেলেছিলেন, যা লাখ লাখ পেরুভিয়ানকে কাজ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল, কয়েক ডজন রাষ্ট্রচালিত কম্পানিকে বেসরকারীকরণ করেছিল এবং বাণিজ্য শুল্ক হ্রাস করেছিল। তিনি পেরুর ভিত্তি স্থাপন করেছিল, যা দেশটিকে কিছু সময়ের জন্য লাতিন আমেরিকার অন্যতম স্থিতিশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বামপন্থী গেরিলা বিদ্রোহ দমনে ফুজিমোরির কঠোর অবস্থানের জন্য তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও পরবর্তী সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পেরুতে প্রত্যর্পণ করা হয়।
এরপর ফুজিমোরি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন এবং পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তখন থেকেই প্রায় ১৬ বছর কারাবন্দি ছিলেন তিনি।
ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ৯০-এর দশকের শুরুর দিকে দুটি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন আলবার্তো ফুজিমোরি। ১৫ বছরেরও বেশি সময় বন্দি থাকার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট তাকে সাধারণ ক্ষমা করলে গত বছরের ডিসেম্বরে লিমার বারবাডিলো কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।