খাদ্যের মান নির্ণয় ও পুষ্টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে কাজ করে পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটগুলো। এমনই একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করতে চেয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর খাদ্য। এর জন্য গবেষকরা এক হাজারের বেশি পুষ্টিকর খাদ্যের পুষ্টিমান বিশ্লেষণ করেছেন। খাবারের মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় সুষম পুষ্টিমান খুঁজতে গিয়ে তারা কয়েকটি খাবারের গুণাগুণ দেখে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছেন।
এই তালিকায় গবেষকরা সবার উপরে জায়গা দিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের খাদ্য চিয়া বীজকে। এর আসল নাম সালভিয়া হিস্পানিকা। পুদিনা গোত্রের পুষ্প উদ্ভিদ চিয়া বীজ সাধারণত মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চল, আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চল এবং গুয়াতেমালায় বেশি জন্মায়। কালো রঙের এই বীজে অধিক পরিমাণ হজমযোগ্য ফাইবার, প্রোটিন, এ-লিনোলেনিক এসি, ফেনোলিক এসিড এবং ভিটামিন থাকে। এই বীজের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশই তৈলাক্ত যা কিনা আলাদাভাবে সংগ্রহ করাও সম্ভব। চিয়া বীজ দ্বারা বিশেষ প্রক্রিয়ায় পানীয় তৈরি করা হয়।
পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ফ্লাটফিশ। অনেকগুলো জাত রয়েছে ফ্লাটফিশের। এদের পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় ফ্লাটফিশকে স্থান দেওয়ার মূল কারণ এরা সাধারণত পারদমুক্ত। তাছাড়া এই মাছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর ভিটামিন বি-১ রয়েছে।
পুষ্টিকর খাবারের তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে রোজ ফিস। উত্তর আটলান্টিকের এই মাছটি ওসিয়ান পার্স এবং আটলান্টিক রেডফিস নামে পরিচিত। কখনো কখনো রকফিশ নামেও এদের ডাকা হয়। গভীর সমুদ্রে এদের পাওয়া যায়। এরা খুব ধীরে ধীরে বড় হয়। পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় আসতে বেশ সময় লাগে এই মাছের। এই মাছে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকে এবং খুবই কম মাত্রার ফ্যাট সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকে।
পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় গবেষকরা চতুর্থ অবস্থানে রেখেছেন দক্ষিণ আমেরিকার ফল চেরিমোয়াকে। সাধারণত কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু এবং বলিভিয়াতে এদের বেশি পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলেও চেরিমোয়া ফলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পৃথিবীর অন্যতম সুস্বাদু ফল হিসেবেও এর সুনাম রয়েছে। মাখনের মতো স্বাদের কারণে এটিকে অনেকে কাস্টার্ড আপেল নামেও ডাকে।
পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে কাজুবাদাম। মানবদেহে স্বাভাবিক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানের ভাণ্ডার এই কাজুবাদাম। এটি তাত্ক্ষণিকভাবে শরীরে শক্তি জোগায়। প্রতি ১০০ গ্রাম কাজুবাদামে ৩০ দশমিক ১৯ গ্রাম শর্করা, ১৮ দশমিক ২২ গ্রাম আমিষ, ৪৩ দশমিক ৮৫ গ্রাম তেল, ৫ গ্রাম দ্স্তা, ১১ গ্রাম আমিষসহ প্রচুর খাদ্যউপাদান ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এ ছাড়াও এতে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন, লৌহ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম এবং খনিজ উপাদান।-বিবিসি