পাকিস্তানে সেই ট্রেন থেকে ১৫৫ জিম্মি উদ্ধার, অভিযানে নিহত ২৭ সশস্ত্র ব্যক্তি

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে জিম্মি অন্তত ১৫৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

উদ্ধারকারীদের হাতে গোষ্ঠীটির অন্তত ২৭ সদস্য নিহত হয়েছেন।

নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, সব সদস্যকে নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে। বুধবার (১২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।

নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী ট্রেনে মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের বোলান এলাকার কাছে হামলা চালায় সশস্ত্র একটি গোষ্ঠী। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে যাত্রীদের জিম্মি করে। ওই সময় ট্রেনটিতে থাকা ৯টি বগিতে ৪ শতাধিক যাত্রী ছিলেন। কতজন সশস্ত্র ব্যক্তি ট্রেনটিতে হামলা চালান, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাকি জিম্মিদের উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান চালবে। এর আগে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনটি থেকে উদ্ধার করা ৫৭ যাত্রীকে আজ বুধবার দিনের শুরুর দিকে কোয়েটায় আনা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় মাচ শহরে আছেন।

নিরাপত্তা বাহিনী বলছে,মঙ্গলবার উদ্ধার অভিযান শুরুর পরপর সশস্ত্র ব্যক্তিরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন। ১৭ জন আহত যাত্রীকে জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাহিনীর সূত্র বলছে, সশস্ত্র ব্যক্তিরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে ‘বিদেশি সহায়তাকারীদের’ সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের মধ্যে আফগানিস্তানে থাকা একজন ‘মাস্টারমাইন্ড’ রয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা ট্রেনে থাকা নারী ও শিশুদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ কারণে অভিযানে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

সশস্ত্র ব্যক্তিরা রেললাইনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ট্রেনটি থামান। এ সময় তারা ট্রেনটির চালকের কক্ষে গুলি চালান। এতে চালক আহত হন। দুর্গম আফগান-ইরান সীমান্তের পাশে পার্বত্য অঞ্চলে থাকা একটি সুড়ঙ্গে প্রবেশের আগমুহূর্তে ট্রেনটি থামানো হয়।

এই ঘটনায় বেলুচিস্তান সরকার জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংগঠিত করা হয়েছে বলে জানান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ।

ঘটনাস্থলে একটি উদ্ধারকারী ট্রেন ও নিরাপত্তা বাহিনীর দল পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সিবি ও কোয়েটা শহরের বেসামরিক হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এসব শহরের বেসামরিক হাসপাতালগুলোয় কয়েকটি ওয়ার্ড খালি করে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় কোয়েটা রেলস্টেশনে একটি জরুরি তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে।

যাত্রীবাহী ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ‘সন্ত্রাসী হামলার’ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, এই পবিত্র রমজান মাসে নিরীহ যাত্রীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো এটাই প্রমাণ করে যে ওই সশস্ত্র ব্যক্তিদের ইসলাম, পাকিস্তান ও বেলুচিস্তানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

Comments (0)
Add Comment