পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহর আধুনিকায়নে বিপুল পরিমাণ অর্থের মার্কিন অনুমোদন দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন প্রশ্ন সামনে এনেছে। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত এলো, যখন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা তুঙ্গে এবং যুক্তরাষ্ট্রও প্রকাশ্য ও পরোক্ষভাবে নয়াদিল্লির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। আর তাই এই চুক্তি কি কেবলই পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, নাকি ভারতের প্রতিও কোনও স্পষ্ট বার্তা আছে— তা নিয়েই বিশ্লেষণ করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য উন্নত প্রযুক্তি ও আধুনিকায়ন সহায়তা বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। এই চুক্তির আর্থিক মূল্য প্রায় ৬৮৬ মিলিয়ন ডলার। আর এ সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে যখন পাকিস্তান ও প্রতিবেশী ভারত উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের হামলার পর দুই দেশ পাঁচ দিনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। একই সময়ে সম্প্রতি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আরও বেশি মার্কিন অস্ত্র কেনার জন্য চাপ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহর আধুনিকায়ন চুক্তিটি আসলে ঠিক কী এবং কেন এই মুহূর্তে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ— সেই বিষয়টি বিশ্লেষণ করা জরুরি।
পাকিস্তানের সঙ্গে কী চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র?
ব্রাসেলসভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক প্রবীণ দোন্থি আল জাজিরাকে বলেন, পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বহর আধুনিকায়নে ওয়াশিংটনের সর্বশেষ এই অনুমোদন আসলে ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া একটি রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তিরই অংশ। ওই চুক্তির লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহর সচল ও কার্যকর রাখা।
দোন্থির ভাষায়, ‘এফ-১৬ চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এ কারণেই কিছু বিলম্ব সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট বাইডেন থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প— উভয় প্রশাসনের আমলে এই ধারাবাহিকতা বজায় আছে। দুই দেশই আঞ্চলিক সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ অভিযানে এই যুদ্ধবিমানগুলোর ভূমিকার ওপর জোর দিচ্ছে।’
সর্বশেষ চুক্তিটি পাকিস্তানের বিদ্যমান এফ-১৬ বহরের প্রযুক্তিগত সহায়তা ও আধুনিকায়নের জন্য। গত ৪ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থার (ডিএসসিএ) কংগ্রেসে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এটি নিশ্চিত করা হয়। ধারণা করা হয়, পাকিস্তানের কাছে বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০টি কার্যকর এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে কিছু পুরোনো হলেও অত্যাধুনিক ব্লক-১৫ মডেল, কিছু জর্ডান থেকে নেয়া এফ-১৬ এবং কিছু অপেক্ষাকৃত নতুন ব্লক– ৫২+ মডেলও আছে।
মার্কিন প্রস্তাবে যুদ্ধবিমান পরিচালনা ও ইলেকট্রনিক ব্যবস্থার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার আপগ্রেড, ‘আইডেন্টিফিকেশন ফ্রেন্ড অর ফো’ (আইএফএফ) সিস্টেম— যার মাধ্যমে পাইলটরা শত্রু ও মিত্র বিমান শনাক্ত করতে পারেন, নেভিগেশন উন্নয়ন, খুচরা যন্ত্রাংশ ও মেরামত সুবিধাও রয়েছে। এছাড়া এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের সহায়তা ও আপগ্রেডের জন্য ৬৪৯ মিলিয়ন ডলারের পাশাপাশি এই চুক্তিতে আরও ৩৭ মিলিয়ন ডলারের ‘মেজর ডিফেন্স ইকুইপমেন্ট’ (এমডিই) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে আছে ৯২টি লিংক-১৬ সিস্টেম।
লিংক-১৬ হলো একটি নিরাপদ সামরিক ডেটা নেটওয়ার্ক, যা যুদ্ধবিমান, নৌযান ও স্থলবাহিনীর মধ্যে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ নিশ্চিত করে। এর মাধ্যমে লেখা ও ছবি আদান-প্রদান করা যায়।
এ ছাড়া ছয়টি এমকে-৮২ ইনঅ্যাক্ট ৫০০ পাউন্ড (প্রায় ২২৬.৮ কেজি) বোমার খোলস বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো বিস্ফোরকবিহীন ধাতব খোলস, যা প্রশিক্ষণ বা পরীক্ষামূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত এতে টিএনটির মতো বিস্ফোরকের বদলে কংক্রিট বা বালুর মতো ভারী বস্তু ভরা থাকে। আর এমকে-৮২ একটি আনগাইডেড বোমা, যা প্রয়োজনে নির্ভুল নির্দেশিত অস্ত্রের ওয়ারহেড হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কী?
এফ-১৬ এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট যুদ্ধবিমান। অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমান ‘ফাইটিং ফ্যালকন’ বা ‘ভাইপার’ নামেও পরিচিত। এটি আকাশে শত্রু বিমানের সঙ্গে যুদ্ধ এবং আকাশ থেকে ভূমিতে নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য পরদর্শী। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন এই বিমান তৈরি করে। ১৯৯৫ সালে তারা এই যুদ্ধবিমান উৎপাদনের দায়িত্ব নেয়। এর আগে জেনারেল ডায়নামিকস এটি তৈরি করেছিল।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের শেষ দিকে এই যুদ্ধবিমানটির উন্নয়ন শুরু হয়। ওই যুদ্ধে সোভিয়েত মিগ বিমান তুলনামূলকভাবে ভারী ও ধীরগতির মার্কিন যুদ্ধবিমানকে চাপে ফেলেছিল। ১৯৭৪ সালে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান প্রথম আকাশে ওড়ে।
আর আজ এটি বিশ্বের অন্যতম বহুল ব্যবহৃত যুদ্ধবিমান। লকহিড মার্টিনের তথ্যমতে, ২৯টি দেশে বর্তমানে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহৃত হচ্ছে। পাকিস্তানের পাশাপাশি ইউক্রেন, তুরস্ক, ইসরায়েল, মিসর, পোল্যান্ড, গ্রিস, তাইওয়ান, চিলি, সিঙ্গাপুর, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও নরওয়ের কাছেও এই যুদ্ধবিমান রয়েছে।
গত মে মাসের ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের ভূমিকা কী ছিল?
গত ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মিরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ভারতের অভিযোগ, সংগঠনটির সঙ্গে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।
কাশ্মিরের সেই হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনে এবং সিন্ধু নদীর পানিবণ্টনের জন্য অপরিহার্য সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে।
এরপর ৭ মে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত আজাদ কাশ্মিরে ৯টি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পাকিস্তানের দাবি, এতে বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হন। পরবর্তী তিন দিন দুই দেশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে একে অপরের সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়।
এই আকাশযুদ্ধে পাকিস্তান ৪২টি ‘হাই-টেক’ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে, যার মধ্যে অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি চীনা নির্মিত জেএফ-১৭ ও জে-১০ যুদ্ধবিমানও ছিল বলে জানান পাকিস্তান বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব আহমেদ। শেষ পর্যন্ত গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। আর এই যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই নিয়েছেন।
ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র?
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্লেষকদের উত্তর— ‘হ্যাঁ’। তাদের মতে, দুটি কারণে এই প্রশ্নের উত্তর— ‘হ্যাঁ’। প্রথমত, পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহর আধুনিকায়নের এই অনুমোদন এসেছে এমন সময়ে যখন ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে আরও বেশি মার্কিন অস্ত্র কেনার জন্য চাপ দিচ্ছে।
চলতি বছরের আগস্টে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র ও বিমান কেনার পরিকল্পনা স্থগিত রাখে বলে রয়টার্স জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি জানতেন এমন তিন ভারতীয় কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন। এর কয়েক সপ্তাহ আগে ওয়াশিংটনে গিয়ে অস্ত্র কেনার ঘোষণা দেয়ার কথা ছিল ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের। তবে পরে সেই সফরও বাতিল হয়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কেও ব্যাপক টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। রাশিয়া থেকে সস্তায় অপরিশোধিত তেল কেনার শাস্তি হিসেবে গত ৬ আগস্ট ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এতে করে আগে থেকেই ভারতের ওপর থাকা ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে মিলিয়ে দিল্লির ওপর মোট মার্কিন শুল্ক দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে।
সেসময় এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান ‘জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে এবং তাই ভারতের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ ‘প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত’ সিদ্ধান্ত। তিনি উল্লেখ করেন, ভারত সরাসরি বা পরোক্ষভাবে রাশিয়ার তেল আমদানি করছে।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ভারত কিছুটা হলেও রাশিয়ার তেল কেনা কমিয়েছে। তবে নয়াদিল্লি জানিয়েছে, মস্কো থেকে তেল কেনা পুরোপুরি বন্ধ করবে না। চীনের পর ভারতই রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল ক্রেতা।
আর সর্বশেষ গত সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে বার্ষিক দ্বিপক্ষীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘ভারতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ দিতে প্রস্তুত রাশিয়া’।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহর আধুনিকায়নের মার্কিন ঘোষণা ভারতের কাছে ভালো লাগার মতো বিষয় হওয়ার সম্ভাবনা কম। দোন্থি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিরোধিতা ভারত আগেও করেছে। ভারতের দাবি, এসব এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হয়।
দোন্থি বলেন, ‘ওয়াশিংটন এবার আগেভাগেই বলে দিয়েছে, পাকিস্তানের কাছে এই সামরিক সরঞ্জাম ও সহায়তা বিক্রি ‘এই অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্যে মৌলিক কোনও পরিবর্তন আনবে না’।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান আল জাজিরাকে বলেন, ‘এখানে ভারতের বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে দেখার দরকার নেই। তবে এই চুক্তিকে কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে ব্যবহার করে বাণিজ্য আলোচনায় ভারতের কাছ থেকে ছাড় আদায়ের চাপ হিসেবে দেখতে পারেন।’
তবে তিনি বলেন, এই চুক্তির নিজস্ব যুক্তিও রয়েছে এবং তা পুরোপুরি ভারতকেন্দ্রিক নয়। এটি দীর্ঘদিনের একটি কর্মসূচির অংশ, যার মাধ্যমে পাকিস্তানের মার্কিন নির্মিত যুদ্ধবিমানগুলো সচল রাখা হয়। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ এটি একক কোনও ভারতকেন্দ্রিক কৌশল নয়, বরং দুটি সমান্তরাল নিরাপত্তা সম্পর্ক।
এই চুক্তি পাকিস্তানকে কতটা শক্তিশালী করবে?
কুগেলম্যান বলেন, এই প্যাকেজটি গুরুত্বপূর্ণ। তার মতে, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানকে দেয়া সবচেয়ে উদার নিরাপত্তা সহায়তার একটি এটি। প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা এটা! এটা কোনও ছোট সংখ্যা নয়।’
এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতাকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, এই চুক্তি সেটাই দেখিয়ে দিয়েছে। কুগেলম্যান বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও বাণিজ্যিক সুযোগ নিয়ে আলোচনা বেশি শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু তুলনামূলক সীমিত হলেও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতাও এই প্রশাসনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
তবে দোন্থি মনে করিয়ে দেন, এই সহায়তা পাকিস্তানকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত তার এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহর সচল রাখতে সাহায্য করবে ঠিকই, কিন্তু ২০২০ সালের পর থেকে পাকিস্তানের অস্ত্র সরবরাহের ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে চীন থেকে।
সুইডিশ গবেষণা সংস্থা সিপরির এ বছরের প্রতিবেদনে যে তথ্য এসেছে, তাতেও এই একই তথ্যের মিল পাওয়া যায়। দোন্থির ভাষায়, ‘মে মাসের সংঘাতে পাকিস্তান চীনা জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে। ইসলামাবাদ একদিকে ওয়াশিংটন, অন্যদিকে বেইজিং— দু’পক্ষের সঙ্গেই ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রেখে লাভবান হচ্ছে।’