পরীক্ষামূলক আঙ্গুর চাষ করে তাক লাগালেন জালাল মিয়া
আঙ্গুর বিদেশি ফল হলেও জনপ্রিয় এ ফলটির পরীক্ষামূলক চাষে সফল হয়েছেন শেরপুরের প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকার মেঘাদল গ্রামের বাসিন্দা জালাল মিয়া। তিনি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজের ১৫ শতাংশ জমিতে শখের বসে লাগিয়ে পেয়েছেন সাফল্য।
প্রথম বছরেই তিনি সফলতার মুখ দেখলেন। এ বাগান করতে তার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। চারা লাগানোর ১০ মাস পর বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে সেই কাঙ্খিত সুমিষ্ট ফল।
বাগান মালিক জালাল মিয়ার আশা, এবার তিন লাখ টাকার উপরে আঙ্গুর বিক্রি করবেন তিনি। নিজের সফলতায় নিজেই মুগ্ধ হয়ে বৃহৎ পরিসরে বাগান করার উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি।
এদিকে পাহাড়ে আঙ্গুরের ভালো ফলনের কথা শুনে প্রতিদিন বাগান দেখতে মানুষের ভিড় লেগে আছে। অনেকেই ইতোমধ্যে তার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে বাগান তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জালাল মিয়া জানান, ভারতে ঘুরতে গিয়ে সেখানে আঙ্গুরের বাগান দেখে এটা চাষ করতে ইচ্ছা হয়। তবে সেখানকার চারা দিয়ে দেশে ভালো হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। প্রথমে দুই জাতের ১০টি চারা নিয়ে আসি। প্রতি চারার খরচ পরেছিলো ১২শ টাকা। পরে আরো দুই ধাপে ৮০টি চারা নিয়ে নিজের ১৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করি। এরপর পরিচর্যা করার পর সুমিষ্ট ফল আসতে শুরু করে। এই চাষ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য নিজেই চার উৎপাদন শুরু করেছি। এতে আগ্রহী কৃষকরা চারা সংগ্রহ করে বাগান তৈরি করতে পারবেন।
স্থানীয় জিয়াউর রহমান নামে এক যুবক বলেন, আঙ্গুর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমাদের সীমান্ত এলাকায় অনেক পাহাড়ি জমি পতিত পরে আছে। তাই আগ্রহী যুবকরা যদি আঙ্গুর চাষে আগ্রহী হয় তাহলে অন্তত জেলার চাহিদা মেটানো সম্ভব।
আদিবাসী কলেজ ছাত্র সিসিন কোচ বলেন, আমার বাড়ি গজনি এলাকায়। আমি আঙ্গুরের বাগান দেখতে এসেছি। ইতোমধ্যে জমি তৈরি করেছি। ১শ চারা দিয়ে বাগান শুরু করবো। এতে ভালো ফলাফল পেলে বড় করে বাগান করার ইচ্ছা আছে। আমি পড়াশোনার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হতে চাই।
শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার বলেন, জালাল মিয়ার আঙ্গুরের বাগান দেখে অনেক কৃষকই আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকেই আমার কাছেও সহযোগীতা চেয়েছেন। যারা আগ্রহী হবেন তাদের সবাইকে কারিগরি সহযোগীতাসহ চারা সরবরাহ করা হবে।