রোজকার কাজের চাপ, ভুল খাদ্যাভ্যাস, পানি কম খাওয়া, প্রস্রাব চেপে রাখার মতো অভ্যাসগুলো প্রভাব ফেলছে শরীরে। ভাবছেন হয়তো, কই তেমন কোনো সমস্যা তো হচ্ছে না। অথচ নীরবেই হয়তো বিকল হচ্ছে কিডনি। অবস্থা শেষ পর্যায়ে পৌঁছানোর পরই হয়তো টেস্ট করে জানতে পারলেন সে কথা। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন কিডনিজনিত রোগে। এর জন্য অবশ্য দায়ী আমরা নিজেরাই। কিডনির সমস্যা দেখা দিলে শরীর নানা সঙ্কেত দিয়ে আমাদের সতর্ক করে। এসব উপসর্গ বেশিরভাগ মানুষই উপেক্ষা করেন। ফলে ভেতরে ভেতরে বাড়তে থাকে রোগ। কোন উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হবেন? জানুন-
শরীরে ফোলাভাব
কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরে পানি জমতে থাকে। ফলে সারা শরীর, বিশেষ করে পা, পায়ের পাতা এবং মুখে ফোলা ভাব দেখা দেয়। তাই হঠাৎ করেই শরীরে ফোলাভাব দেখা দিলে সতর্ক হোন।
অস্বাভাবিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা
পরিশ্রমের পর ক্লান্ত লাগা স্বাভাবিক। কিন্তু সামান্য কাজ করেই কি হাঁপিয়ে উঠছেন? কোনো কাজে মন দিতে পারছেন না? কদিন পরপরই জ্বরে ভুগছেন? এমনটা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
প্রস্রাবের পরিবর্তন
কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়, রং গাঢ় হয়ে যায়, ফেনা বা বুদবুদ তৈরি হয়। প্রস্রাবে এমন পরিবর্তন দেখা দিলে সতর্ক হোন
খিদে কমে যাওয়া
কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে খাওয়ার ইচ্ছা থাকে না। একই সঙ্গে হজমের সমস্যাও শুরু হয়।
নিদ্রাহীনতা ও শ্বাসকষ্ট
শরীরে তরল জমে গিয়ে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সারা শরীরে অস্বস্তি হওয়ার কারণে ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটে। তাই হঠাৎ করে এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে সচেতন হোন।
হার্টের অসুখ
শরীরে পানি জমা মানে হার্টেও পানি জমার ঝুঁকি থাকে। ফলে হৃদযন্ত্রে চাপ পড়ে। হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা হলে হতে পারে তা কিডনি সমস্যার কারণেই।
ওপরের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং কিডনির টেস্ট করিয়ে ফেলুন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে তার সঙ্গে লড়াই করা সহজ হয়।
কিডনির অসুখ ধরা পড়লে কী কী নিয়ম মেনে চলা উচিত?
১. রক্তচাপ ও শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
২. লবণ ও প্রোটিন খাওয়া কমান।
৩. অতিরিক্ত পানি বা তরল পান কমান (দিনে ২ লিটারের বেশি নয়)
কিডনির ব্যাপারে সচেতন হোন। নিজের শরীরের যত্ন নিন। খাদ্যতালিকায় সুষম খাবার রাখুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।