পাকিস্তানে নির্বাচন ঘোষণার জন্য সরকারকে ৬ দিন সময় দিলেন পিটিআই প্রধান ইমরান খান। বৃহস্পতিবার সকালে ইসলামাবাদের নবম এভিনিউতে আন্দোলনকারীদের সামনে এই ঘোষণা দেন তিনি। ইমরান বলেন, সরকারকে পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিতে হবে এবং নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে। নইলে তিনি সকল পাকিস্তানিকে নিয়ে আবারও রাজধানীতে আসবেন। এ খবর দিয়েছে ডন।
ইমরান বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যতক্ষণ না সরকার পার্লামেন্ট বাতিল করে নির্বাচন ঘোষণা না করে আমি এখানেই বসে থাকবো। গত ২৪ ঘন্টায় আমি দেখেছি, এই সরকার পুরো জাতিকে অরাজকতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান সরকার দেশের মানুষ এবং পুলিশের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তাই তিনি যদি ইসলামাবাদে তার সমর্থকদের নিয়ে অবস্থান করেন তাহলে সরকার খুশি হবে। কারণ এতে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সংঘাত বাড়বে। এরপরই তিনি সরকারকে ৬ দিন সময় দেন।
ভাষণে দেশজুড়ে পিটিআই নেতাদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান ইমরান খান।
আজাদি মার্চ থামাতে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার সমালোচনা করেন তিনি। ভাষণে বারবার পাকিস্তানের সরকারকে ‘আমদানি করা সরকার’ বলে আখ্যায়িত করেন। ইমরান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের ব্যাপক দায়িত্ব ছিল। বিশ্বের কোন গণতান্ত্রিক দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে দেয়া হয় না? কোথায় এভাবে টিয়ার গ্যাস, পুলিশ অভিযান এবং গ্রেপ্তারের মুখোমুখি হতে হয়?
ইমরান দাবি করেন, আজাদি মার্চ শুরুর পর অন্তত ৫ পিটিআই কর্মী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন টিয়ার গ্যাস থেকে বাঁচতে আটোক ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যান। আরেকজনকে রাভি নদীতে ঠেলে ফেলা হয়। এছাড়া করাচিতে আরও তিন জনকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। আজাদি মার্চের অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে ইমরান খান বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে ইসলামাবাদে পৌঁছাতে তার ৩০ ঘণ্টা সময় লেগেছে। আমাদের এই আজাদি মার্চে ব্যাঘাত ঘটাতে সরকার সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে তারা টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। আমাদের বাড়ি-ঘরে অভিযান চালিয়ে তছনছ করেছে। তবে তারা যা-ই করুক, আমি জাতিকে দাসত্বের ভয় থেকে মুক্ত হতে দেখেছি।
ইমরান খান সুপ্রিম কোর্টের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, আমরা কি এমন অপরাধ করেছিলাম? আমরা পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক এবং আইনজীবী সম্প্রদায়ের কাছে ন্যায় বিচার চাই। তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার সবার আছে। আমাদের সাথে সরকার যে আচরণ করছে, তাদেরকে সেই অধিকার কেউ দেয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় যা হয়েছে, এখন তিনি ও পুরো জাতি বিচার বিভাগের দিকে তাকিয়ে আছে। সমাবেশে যোগ দেয়া নারী আন্দোলনকারীদের প্রশংসা করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ‘সত্যিকারের স্বাধীনতা’র জন্য তারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা তুলে ধরেন তিনি। এছাড়া নিজ দলের কর্মীদের দেশ প্রেমের কথাও বলেন ইমরান।