নামাজের বৈঠকে আঙুলের ইশারার নিয়ম কী

নামাজের রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়ম ও রীতি। এতে বৈঠক বা হাঁটুগেড়ে বসা নামাজের একটি অংশ। প্রতি দুই রাকাতবিশিষ্ট নামাজের শেষে বৈঠক করা ফরজ। চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের প্রথম দুই রাকাতের পর বৈঠক করা ওয়াজিব এবং শেষের বৈঠক ফরজ।

নামাজরত মুসল্লির জন্য তর্জনী দ্বারা ইশারার করার একটি সুন্নতের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। আর তা হলো ‘আশহাদু’ বলার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলীর মাথা একসঙ্গে মিলিয়ে গোলাকার বৃত্ত বানানো এবং অনামিকা ও কনিষ্ঠাঙ্গুলিদ্বয় মুড়িয়ে রাখা এবং ‘লা ইলা হা’ বলার সময় শাহাদাত আঙুল উঁচু করে ইশারা করা। অতঃপর ‘ইল্লাল্লাহু’ বলার সময় আঙুলের মাথা সামান্য ঝোঁকানো। হাঁটুর সঙ্গে না লাগানো। (রদ্দুল মুহতার : ১/৪৭৬)

 

 

নবী করিম (সা.) নামাজ আদায়কালে তাশাহহুদ পড়ার সময় এভাবে শাহাদাত আঙুল দ্বারা ইশারা করতেন। এর দ্বারা তিনি আল্লাহ তায়ালার একত্মবাদের সাক্ষ্য দিতেন। কিন্তু কাফের সম্প্রদায় নবীজি (সা.) এর এ রকম ইশারা করাকে পছন্দ করত না। তারা বলত রাসুল (সা.) এ ইশারা দ্বারা জাদু করতেন। অথচ নবীজি (সা.) আল্লাহর একত্মবাদের প্রতি ইঙ্গিত করতেন। এ আমল মুসলিম উম্মাহর ওপর সুন্নত। তাই প্রত্যেক মুসল্লিকে নামাজ আদায়কালে তাশাহহুদ পড়ার সময় এ সুন্নতের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। হাদিসে এসেছে, হজরত খিফাফ ইবনে ইমা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) যখন নামাজের শেষ বৈঠকে বসতেন তখন নিজ শাহাদাত তথা তর্জনী আঙুল দ্বারা ইশারা করতেন। মুশরিকরা বলত, তিনি এ ইশারা দ্বারা জাদু করেন। অথচ তারা মিথ্যা বলত। বরং রাসুল (সা.) তা দ্বারা একত্মবাদের প্রতি ইঙ্গিত করতেন। (মুসনাদে আহমদ : ১৭০২৩)

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নামাজ আদায়ে বসতেন, তখন তার দুই হাত দুই হাঁটুর ওপর রাখতেন আর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির পার্শ্ববতী আঙুল উঠিয়ে ইশারা করতেন এবং বাঁ হাত বাঁ হাঁটুর ওপর ছড়িয়ে রাখতেন। (মুসলিম: ১৩৩৭)

তাশাহহুদের আরবি, উচ্চারণ ও অর্থ

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

অর্থ: সব মৌখিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ বা উপাস্য নাই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রসুল।