নভেম্বরে বিশ্বব্যাপী ইভি খাতে কমেছে প্রবৃদ্ধি

বিশ্বব্যাপী বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) বিক্রি বাড়লেও প্রবৃদ্ধি কমেছে। গত মাসে ইভি বিক্রি বেড়েছে ৬ শতাংশ, যা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সবচেয়ে ধীর প্রবৃদ্ধি। চীনে ইভি বিক্রিতে স্থবিরতা ও যুক্তরাষ্ট্রে নীতিগত পরিবর্তনের প্রভাবেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বাধীন গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইন্টেলিজেন্সের (বিএমআই) তথ্যানুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ইভি নিবন্ধন নভেম্বরে বেড়ে পৌঁছেছে প্রায় ২০ লাখে। নিবন্ধন সংখ্যাকে বিক্রির সূচক হিসেবে ধরা হয়।

চীনে নভেম্বরে ইভি নিবন্ধন বেড়েছে ৩ শতাংশ, সংখ্যায় যা ১৩ লাখের বেশি। বার্ষিক ভিত্তিতে এটি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। বিশ্বব্যাপী ইভির মোট বিক্রির অর্ধেকেরও বেশি হিস্যা চীনের। ফলে দেশটিতে বিক্রয় প্রবৃদ্ধি কমায় প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারে।

যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর আমেরিকার বাজারে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি বিক্রি কমেছে। নভেম্বরে উত্তর আমেরিকায় ইভি নিবন্ধন কমেছে ৪২ শতাংশ। এ সময়ে এক লাখের কিছু বেশি গাড়ি বিক্রি হয়েছে। অক্টোবরেও বিক্রি কমেছিল। যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির করছাড় বা ট্যাক্স ক্রেডিট সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়াই এর প্রধান কারণ বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত উত্তর আমেরিকায় ইভি বিক্রি ১ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম অঞ্চলটি বছর শেষে বিক্রি কমার পথে রয়েছে।

ইউরোপে ব্যাটারিচালিত ও প্লাগ-ইন হাইব্রিডসহ ইভি নিবন্ধন শক্ত অবস্থানে রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের প্রণোদনা কর্মসূচির কারণে ইউরোপে এখন পর্যন্ত বিক্রি বেড়েছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। নভেম্বরে ইউরোপে নিবন্ধন হয়েছে চার লাখের বেশি গাড়ি। ইউরোপের বাইরে অন্যান্য অঞ্চলেও বিক্রি বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। সেখানে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার ইভি নিবন্ধন হয়েছে।

বিএমআইয়ের তথ্য ব্যবস্থাপক চার্লস লেস্টার বলেছেন, ‘আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে ইভি বিক্রি কমার পূর্বাভাসই আমরা এখনো দেখছি। বাজারে ট্যাক্স ক্রেডিটের প্রভাব ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী।’

পরিবেশবান্ধব পরিবহন নিয়ে কাজ করেন এমন সংগঠনগুলো বলছে, কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমাতে দ্রুত ইভিতে রূপান্তর জরুরি। তবে প্রত্যাশার তুলনায় ধীরগতির বিক্রির কারণে কিছু পরিবেশবান্ধব প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসছে গাড়ি নির্মাতা ও সরকারগুলো। কারণ তারা ভাবছে কর্মসংস্থান ও মুনাফা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে আগের প্রশাসনের চূড়ান্ত করা জ্বালানি সাশ্রয় মানদণ্ড শিথিল করার প্রস্তাব দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও গাড়ি খাত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব প্রকাশ এক সপ্তাহ পিছিয়েছে। এতে ২০৩৫ সালের নতুন কার্বন নিঃসরণকারী গাড়ি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা দুর্বল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।