দোয়া হলো ইবাদতের অংশ। ভাগ্য পরিবর্তনে দোয়ার বিকল্প কিছু নেই। এজন্য বিপদ-আপদ কিংবা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি অথবা কল্যাণ চেয়ে বরাবরই মুমিনরা সৃষ্টিকর্তার দরবারে দু’হাত তুলে ধরেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, সৎকর্ম ব্যতীত অন্য কিছু আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ব্যতীত অন্য কিছুতে তাকদীর (ভাগ্য) রদ হয় না। (সুনান ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৪০২২)
অন্যদিকে মহান রাব্বুল আলামিন খোদ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু। যখন কোনো বান্দা তার নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন না। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় ও ঈমান আনয়ন করে। আশা করা যায়, তারা সফলকাম হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)।
এজন্য খোদ রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে দুই হাত তুলে দোয়া করতেন। উম্মতদেরও তিনি মহান রবের নিকট দোয়া করার পদ্ধতি জানিয়েছেন। যা বিভিন্ন সময়ে সাহাবায়ে-কেরামদের মাধ্যমে বর্ণিত নানা হাদিসে এসেছে। এরমধ্যে একটি হাদিসে এমন একটি দোয়ার কথা এসেছে, যা নবীজি (সা.) বেশি বেশি করতেন।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসটি হলো- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে (নামাজে) এমন দোয়া করতেন- ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে গুনাহ এবং ঋণ থেকে পানাহ্ (আশ্রয়) চাচ্ছি।’
একবার জনৈক এক ব্যক্তি নবীজিকে (সা.) প্রশ্ন করেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.)! আপনি ঋণ থেকে এত বেশি বেশি পানাহ্ চান কেন? জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা খেলাফ (ভঙ্গ) করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২২৩৯)
মনে রাখতে হবে, ঋণ আদায় না করে মারা যাওয়া ব্যক্তির ঋণ যতক্ষণ পর্যন্ত না তার হয়ে কেউ আদায় করে, ততক্ষণ তার রুহ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত মুমিনের রুহ ঋণের সঙ্গে লটকানো থাকে। (মেশকাত, হাদিস: ২৯১৫; সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ১০৭৮)