২০২৬ সালের মধ্যে নতুন দশটি বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) আনতে যাচ্ছে টয়োটা মোটর করপোরেশন। নেয়া হয়েছে ১৫ লাখ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা। ইভির বাজারে চলমান প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাওয়ার পর নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি বিশেষ বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কোজি সাতো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বিক্রির দিক থেকে বিশ্বের বৃহৎ অটো প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টয়োটা। নতুন নেতৃত্বের অধীনে কোম্পানিটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো ঢেলে সাজাচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্মের ব্যাটারিচালিত ইভি তৈরিতে বিশেষ একটা ইউনিটই প্রস্তুত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
টয়োটা ও এর অধীনে থাকা অভিজাত লেক্সাস মিলিয়ে মাত্র তিনটি ব্যাটারিচালিত মডেল বর্তমান বাজারে রয়েছে। বাজারে অন্যান্য প্রতিযোগীর তুলনায় যা উল্লেখজনকভাবে কম। গত বছর বিশ্বব্যাপী টয়োটার বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির বিক্রি ২৫ হাজারেরও কম হয়েছে।
নতুন প্রযুক্তি অধিগ্রহণে মন্থর গতির জন্য টয়োটার প্রতি অসন্তুষ্ট বিনিয়োগকারী ও পরিবেশবাদী সংস্থাগুলো। সমালোচনা এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। দাবি করা হয়েছে, টেসলা ও অন্যান্য কোম্পানির দ্রুত বিস্তৃতিশীল ব্যাটারিচালিত গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে টয়োটা। তবে এমন অভিযোগ স্বীকার করতে নারাজ জাপানি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ভোক্তাদের জন্য বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি একটা অপশন। অথচ গ্যাসোলিন-বিদ্যুচ্চালিত হাইব্রিড গাড়ির পথ দেখিয়েছে টয়োটার প্রায়াস। যা আরো বেশি বাস্তব ও সম্ভাবনাময়। প্রধান নির্বাহী কোজি সাতো বিবৃতিতে বলেন, ‘আগামী বছরগুলোতে আমরা ব্যবসা প্রসারিত করব বিদ্যুচ্চালিত গাড়িতে। সম্প্রসারিত হবে ব্যাটারিচালিত মডেল। আর হাইব্রিড গাড়ি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।’
২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট গাড়ির অর্ধেকই ইভিতে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে। সেদিকে লক্ষ রেখে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন জলবায়ু সংরক্ষণ সংস্থা ও পরিবেশবাদীরা। টেসলার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ জোরেশোরেই এগিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্যপূরণে। তবে সে চাহিদা পূরণ টয়োটার জন্য কঠিন হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। যদিও সেখানকার বাজারে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির উৎপাদন সার্বিকভাবেই বেশি। টয়োটা ২০২৬ সালের মধ্যে ১৫ লাখ ব্যাটারিনির্ভর ইভি বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের দেয়া পূর্বাভাসের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। প্রতিষ্ঠানটি ব্যাটারিচালিত গাড়ি বিক্রির পূর্বাভাস দিয়েছিল ১২ লাখ ইউনিট।