দেশে প্রথমবারের মতো ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। এর মধ্যে আগে ভোটারযোগ্য হয়ে বাদ পড়া ৩১ লাখের বেশি এবং ১৭ বছর বয়সী সাড়ে ১৮ লাখ নতুন ভোটার রয়েছেন। পাশাপাশি বিদ্যমান তালিকা থেকে ১৫ লাখের বেশি ভোটার বাদ যাবেন, তারা এরই মধ্যে মারা গেছেন। নতুন যুক্ত হওয়া অর্ধ কোটি ভোটারের মধ্যে পুরুষ ২৪ লাখ ১৭ হাজার ৬৯২ ও নারী ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৮৬ জন। অর্থাৎ, তালিকায় পুরুষের চেয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৬ জন নারী ভোটার বেশি যুক্ত হচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য তুলে ধরেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। শতকরা ৪ ভাগ ভোট বাড়ছে বলে তিনি জানান।
আখতার আহমেদ বলেন, গত সোমবার পর্যন্ত বাদ পড়াদের (অতীতে যারা ভোটার হতে পারেননি) মধ্যে ভোটার বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ ও নতুন ভোটার (যারা আগামী বছর ১ জানুয়ারি ১৮ বছর বা ভোটারযোগ্য হবেন) বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। মোট ভোটার বৃদ্ধির হার ৪ শতাংশ।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, চলমান ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচিতে ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪৫ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যদিও লক্ষ্য ছিল ৬১ লাখের ৮৯ হাজার ৩৭৫ জন। এর মধ্যে ভোটারযোগ্য বাদ পড়া ভোটা রয়েছেন ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৫১৯ জন; যেখানে পুরুষ ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮০ জন, নারী ১৬ লাখ ৬২ হাজার ৯৯২ জন ও হিজড়া ১৪৭ জন রয়েছেন।
এ ছাড়া ১৭ বয়সী নতুন ভোটার রয়েছেন ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৫৩ হাজার ৩১২ জন ও নারী ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ জন ও হিজড়া ২৩৮ জন। মৃত ভোটার হিসেবে বাদ যাবেন ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৪২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৪২৯ জন ও নারী ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৪০৯ জন ও হিজড়া ৫৮৮ জন।
গত ২০ জানুয়ারি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। গত সোমবার শেষ হয় তথ্য সংগ্রহের কাজ। আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি নেওয়ার কাজ, যা চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে স্থানীয় নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন বাদপড়ারা।
২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম, যারা বাদ পড়েছেন, তাদের ভোটার তালিকাভুক্তি ও মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ এবং আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তরের তথ্য থাকবে হালনাগাদে।
ইসির এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হলেও কেউ বাদ পড়লে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন।
২০২৪ সালের ২ মার্চ প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় ভোটার ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখের বেশি। গত ২ জানুয়ারি গত বছরের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ইসি। তাতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জনের নাম। তাতে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন। আগামী ২ মার্চ তাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে।
এবার হালনাগাদে যারা যুক্ত হচ্ছেন, তাদের কাজ জুনের মধ্যে শেষ করতে চায় ইসি। সেক্ষেত্রে নতুনদের যোগ করে এবং মৃতদের বাদ দিয়ে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যা জানা যাবে।
ডিসেম্বরে ভোট হলে তথ্য সংগ্রহ করা অনেকেই ভোটার তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। আর ২ জানুয়ারির পরে ভোট হলে নতুন করে যাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, তাদের সবাই তালিকাভুক্ত হতে পারবেন।