পাকিস্তান মুসলিম লীগের (এন) প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, তার মেয়ে পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজসহ কয়েক জন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেছে দেশটির পুলিশ।
সেনাবাহিনী নিয়ে মন্তব্য করায় সোমবার লাহোরের শাহদারা থানায় পিএমএল-এন দলের ৪৪ নেতার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। এ মামলায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর পাকিস্তানব্যাপী বিক্ষোভ শুরুর কয়েক দিন আগে এ মামলা দায়ের হলো। খবর এনডিটিভি ও পাক ট্রিবিউনের।
মামলায় নওয়াজ ও মরিয়ম নওয়াজ ছাড়াও পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা আয়াজ সাদিক, শহিদ খাকন আব্বাসী, পারভেজ রশিদ, খাজা আসিফ, রানা সানাউল্লাহ, ইকবাল জাগরাকেও এ মামলার আসামি করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নওয়াজ শরিফ একজন দণ্ডিত; আর একজন দণ্ডিত অপরাধীর এ ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার সুযোগ নেই।
মামলার পর পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী ফায়াজুল হাসান চৌহান, যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
পাঞ্জাব পুলিশ বলছে, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাভোগের সময় অসুস্থ হয়ে পড়ায় আদালতের অনুমতি নিয়ে ২০১৯ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান তিনবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নওয়াজ শরিফ। তার আইনজীবীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী তাকে পাকিস্তানে ফিরতে আট সপ্তাহ সময় দেয়া হলেও স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে তিনি ফিরতে ব্যর্থ হন। তার পর থেকে সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকেন।
এক বছরেরও বেশি সময় পর গত ২০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলোর এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নওয়াজ শরিফ। লন্ডন থেকে ভিডিও লিংকে যুক্ত হয়ে সেনাবাহিনীকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের লড়াই তাদের বিরুদ্ধে যারা ইমরান খানকে ক্ষমতায় বসিয়েছে আর যারা তার মতো এক অযোগ্য ব্যক্তিকে ক্ষমতায় আনতে নির্বাচনে জালিয়াতি করেছে এবং এভাবে দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দেশটির বিরোধী দলগুলো পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) নামে একটি প্লাটফরম গড়ে তুলেছে। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টোর উদ্যোগে এ প্লাটফরম গঠিত হয়েছে। বিরোধীদের আন্দোলন দমাতে নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
এরই অংশ হিসেবে অর্থপাচার ও আয়বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগে করা মামলায় পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে।