দেশের নদ-নদীর সংখ্যা ১হাজার ১৫৬টি। এগুলো রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকার মোট ২১টি খালকে দূষণ ও দখল মুক্ত করে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গ্রিন রোডে পানি ভবনে বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা নির্ধারণ বিষয়ক অবহিতকরণ সেমিনারে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এদিন নদ-নদীর সংখ্যার খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত সংখ্যা যাচাইয়ের পর এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
আগামী পহেলা বৈশাখে নদ-নদীর এই তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
উপদেষ্টা বলেন, এই খসড়া তালিকা প্রস্তুতের সঙ্গে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জড়িত। আমরা এখানে ভূমি মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করব। আমরা তিনটি মন্ত্রণালয় মিলে একসঙ্গে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে এই তালিকা চূড়ান্ত করে আমাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিতে চাই।
উপদেষ্টা আরও বলেন, যে নদীগুলোর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, সেগুলোর যদি রেকর্ড থাকে তাহলে ডিসিদের বলব, যাচাই করে আমাদের পাঠিয়ে দিতে। নদীর সংখ্যাটা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। পহেলা বৈশাখের মধ্যে নদীর সংখ্যার চূড়ান্ত তালিকা দিয়েই আমরা থেমে থাকব না। এরপর পর্যায়ক্রমে নদীর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, অবস্থাসহ অন্যান্য তথ্য সেই তালিকায় যুক্ত করা হবে। তালিকায় নদীর অফিশিয়াল নামের পাশাপাশি স্থানীয় নামও থাকবে।
মৃত নদী বলে কিছু নেই জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রবাহহীন নদী বলা যায়, কিন্তু মৃত নদী বলার সুযোগ নেই। মৃত নদী বলেই ডিসিদের কেউ কেউ নদীকে লিজ দিয়ে ফেলেন। প্রবাহহীন নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে আনার সুযোগ থাকে। কিন্তু মৃত ঘোষণা করলে নদীর জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এটা আমরা হতে দেব না।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা আরো বলেন, আমরা হাওর ও বিলের তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলেছি। এরপরে আমরা খালের তালিকা চূড়ান্ত করব। আজকে থেকে তিন মাসের মধ্যে ডিসিরা এই তালিকা করবেন।
সেমিনারে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অসম্ভব রকমের নদী দূষণ হচ্ছে। এই দূষণ যে শুধু ব্যবসায়ীরা করছে তা নয়, নদীর ভেতরে অনেক ড্রেজার ও ছোট ছোট জাহাজ ডুবে আছে। এভাবে নদীগুলো মরে যাচ্ছে। এগুলো উদ্ধার করতে হবে। নইলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে চর পড়ে যাবে।
তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) ব্যবহার না করে যেসব কারখানার নদীর মধ্যে বর্জ্য ফেলছে, তাদের ড্রেনগুলো পাকা করে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে এম সাখাওয়াত আরও বলেন, নদী উদ্ধার করার এখনই সময়। অবৈধ বালুমহালগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। শুধু সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা না করে নদীগুলো কী অবস্থায় আছে তা বিবেচনা করতে হবে।