সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দুদকের আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ।
তবে পর্যবেক্ষণে কী থাকবে তা জানা যায়নি। এর জন্য রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে এ রায় দেন।
আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, এ কে এম ফজলুল হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। পৃথক রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আরশাদুর রউফ ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ে দুদক নয়, সিদ্ধান্ত নেবেন বিশেষ জজ আদালত- হাইকোর্টের এমন অভিমত দিয়ে দেওয়া রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে পাঁচটি আবেদন করে দুদক।
অপরাধে জড়িত সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর দুদক নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে কি-না এবং এ জন্য নতুন করে আইনের প্রয়োজন আছে কি-না সে প্রশ্নে গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ শুনানি হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।
ব্যবসায়ী নরসিংদীর আতাউর রহমান ওরফে সুইডেন আতাউর রহমান, জাহাজ ব্যবসায়ী গাজী বেলায়েত হোসেনসহ বেশ কয়েকজনকে বিদেশ যাবার ক্ষেত্রে বিরত রাখতে ব্যবস্থা নিতে ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দেয় দুদক। শুধুই এই দুইজন নয়, এর আগেও ব্যবসায়ী, রাজনীতিবীদসহ অসংখ্য ব্যক্তিকে এরকম বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চিঠি দিয়ে আসছে দুদক। এরই মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে ওই দুই ব্যবসায়ী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাফসির মোহাম্মদ আউয়াল হাইকোর্ট রিট আবেদন করেন। এরম ধ্যে কয়েকটি মামলায় হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, কোনো কোনোটিতে আদেশ দিয়েছেন। এসব রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। এসব আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি হয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান দুদকের পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে শুনানি করেন। তাঁরা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বাতিলের পক্ষে মত দেন। অপরদিকে রিট আবেদনকারীপক্ষে অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশ যেতে অনুমতিসংক্রান্ত হাইকোর্টের পৃথক তিনটি রায় ও দুটি আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা পৃথক পাঁচটি লিভ টু আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। আপিল বিভাগ ২৭ সেপ্টেম্বর রায়ের জন্য ধার্য করেন।