যশোরের মনিরামপুরে মাস্ক না পরায় তিন বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে ছবি তোলার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ শনিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘(কান ধরিয়ে ছবি তোলার) ছবিটি আমি দেখেছি। এটা আমাদের কাজ নয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে মনিরামপুর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মনিরামপুরে মাস্ক না পরায় শুক্রবার বিকেলে তিন বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে সাজা দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান এই সাাজা দেন। কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে সাজা দেওয়ার ঘটনাটি নিজের মোবাইল ফোনে ছবিও তোলেন তিনি। তিন বৃদ্ধকে কান ধরানো এবং তার ছবি তোলার মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সামলোচনার ঝড় ওঠে।
জানা যায়, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লোকসমাগম না করতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বে শুক্রবার বিকেল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মনিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা বাজারে অভিযানের সময় প্রথমে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন দুই বৃদ্ধ। এর মধ্যে একজন বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন, অন্যজন রাস্তার পাশে বসে কাঁচা তরকারি বিক্রি করছিলেন। কিন্তু তাদের মুখে মাস্ক ছিল না।
এ সময় পুলিশ ওই দুই বৃদ্ধকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসান শাস্তি হিসেবে তাদেরকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। শুধু তাই নয়, এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই তার মোবাইল ফোনে এ চিত্র ধারণ করেন। এ ছাড়াও পরবর্তী সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত আরেকজন ভ্যানচালককেও একইভাবে কান ধারিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন।
এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে শনিবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানকে মনিরামপুর থেকে প্রত্যাহার করা হলো।