দিল্লীতে বিধানসভা নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (এএপি বা আপ)। ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয় গতকাল। দলটি ৬২টি আসনে জিতেছে। আর ক্ষমতাসীন বিজেপি জিতেছে মাত্র ৮টি আসনে। এর মধ্য দিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি তৃতীয়বারের মতো দিল্লির ক্ষমতায় এল।
প্রথম থেকেই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসে ছিল আম আদমি পার্টি। বুথফেরত সব সমীক্ষাতেও এই ইঙ্গিতটাই ছিল। গতকাল সকাল থেকেই আপ-এর কার্যালয়ের সামনে কর্মী-সমর্থকরা ভিড় জমাতে শুরু করেন। গণনা যত এগুচ্ছিল, আপ কর্মীদের উচ্ছ্বাস ততোই বাড়ছিলো।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোট, যে ভোটে জিতে প্রথম বার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদী, সেই ভোটে বিজেপি দিল্লিতে সাতটির মধ্যে সাতটি আসনেই জিতেছিল।
কিন্তু পরের বছরই (২০১৫ সালে) বিধানসভা ভোটে আপ স্রোতে ভেসে গিয়েছিল বিজেপি। দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে ৬৭টিতেই জিতেছিল (আপ)।
কিন্তু ২০১৯-এ অর্থাত্ গত লোকসভা ভোটে, চিত্রটা একদম উল্টে যায়। লোকসভার সাতটি আসনের সাতটিতেই ফের জেতে বিজেপি।
এবার বিধানসভা ভোটে আপ স্রোতে ফের ভেসে গেলো বিজেপি। দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে ৬২টিতেই জিতে গেলো (আপ)।
জয়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় আপ বলেছে, ‘সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা’ই তাদের এই বড় জয়ের নেপথ্যের মূল কারণ।
কিন্তু দিল্লীতে বিপুল জয়ের উচ্ছ্বাসে যখন ভাসছিল আম আদমি পার্টি (আপ) ও তার দলের কর্মী-সমর্থকরা, ঠিক তখনই (মঙ্গলবার রাতে সাড়ে ১০টা) আপ বিধায়ক নরেশ যাদবের কনভয় লক্ষ্য করে পর পর কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়। সেই হামলাতে মৃত্যু হয় বিধায়কের গাড়িতে থাকা এক কর্মীর। যদিও বেঁচে গিয়েছেন নরেশ। মেহরাউলি থেকে এ বারের ভোটে জিতেছেন নরেশ যাদব।
দলের এক কর্মীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে আপ। দলের তরফ থেকে টুইট করে বলা হয়, “আজ আমরা পরিবারের এক সদস্যকে হারালাম। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।” নরেশ যাদব এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ঘটনাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। জানি না এই হামলার পিছনে কী কারণ রয়েছে। ৪ রাউন্ড গুলি চলেছে। যে গাড়িতে আমি ছিলাম, সেই গাড়ি লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় আমারও মৃত্যু হতে পারত! আমি নিশ্চিত পুলিশ যদি সঠিক তদন্ত করে তা হলে হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে পারবে।”
এদিকে গো-হারা হেরে ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বাগাড়ম্বর করা নেতারা অনেকটাই যেন চুপসে গেছেন। এ নিয়ে মজা করতেও ছাড়ছে না ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম।
বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি এবং ভারতের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর মাথায় হাত দেয়া একটি ছবি দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার একটি শিরোনাম- শনিবার রাত থেকেই ‘উধাও’ অমিত।