প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল ইসলাম জানান সে ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা হারে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নেন। বন্দরে কর্মরত থাকাকালীন তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে সে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালি ইত্যাদির কৌশল রপ্ত করে। পরে বিভিন্ন রকম দালালির সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়। এক পর্যায়ে একটি দালালি সিন্ডিকেট তৈরি করে। ২০০৯ সালে সে চাকরি ছেড়ে দেয়।
তিনি বলেন, নুরুল টেকনাফ বন্দর কেন্দ্রিক দালালি সিন্ডিকেটের অন্যতম মূলহোতা। তার সিন্ডিকেটের ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে দালালি কার্যক্রমগুলো করে থাকে। এই সিন্ডিকেটটি পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথিমধ্যে অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় ছিল। সিন্ডিকেটের সহায়তায় পার্শ্ববর্তী দেশ হতে কাঠ, শুটকী মাছ, বরই আচার, মাছ ইত্যাদির আড়ালে অবৈধ পণ্য নিয়ে আসা হত। চক্রটির সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বর্হিগমন নিয়ন্ত্রণ করত। তার সঙ্গে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের যোগসাজশ ছিল বলে সে জানায়। এছাড়া সে অন্যান্য অবৈধ পণ্যের কারবারের জন্য হুন্ডি সিন্ডিকেটের সাথে সমন্বয় এবং চতুরতার সাথে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েজ কারসাজি করত।
মঈন বলেন, অবৈধ আয়ের উৎসকে ধামাচাপা দিতে সে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। সেগুলো হলোঃ এমএস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এমএস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এমএস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল স্টেট লিমিটেড এবং এমএস কানিজ এন্টারপ্রাইজ অন্যতম। অবৈধ আয় দিয়ে নুরুল ঢাকা শহরে ৬ টি বাড়ি ও ১৩ টি প্লট ক্রয় করেছে। এছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে/বেনামে সর্বমোট ৩৭ টি জায়গা/প্লট/বাগানবাড়ি/বাড়ি কিনেছে। তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা। এছাড়া নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে আরও কোটি কোটি টাকা রয়েছে। জাহাজ শিল্প ও ঢাকার পাশে বিনোদন পার্কে সে বিনিয়োগ করেছে। সব মিলিয়ে তার কম বেশি হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে র্যাবের গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে।