করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে শুধু দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্যদের বিদ্যালয়ে যেতে হবে সপ্তাহে মাত্র এক দিন। আর এ বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি রবিবার জাতীয় সংসদে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর দশম ও দ্বাদশ ছাড়া অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে এক দিন বিদ্যালয়ে এসে পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার এক দিন আসবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। শ্রেণিকক্ষে তাদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। করোনার এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো সম্ভব হবে না। তাই সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে না এনে আলাদা আলাদা দিন ক্লাসে আনার ব্যবস্থা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের প্রস্তুতি নিতে বলেছি। এরপর জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শ নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ঘোষণা করব।’
ডা. দীপু মনি বলেন, চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রায় একটি বছর সরাসরি ক্লাসে অংশগ্রহণ করেনি। তাই এবার এ দুটি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। এরপর তা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হচ্ছে। এর ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত বছরের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কওমি মাদরাসা বাদে অন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে। এ বিষয়ের উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে দূরে রাখতে পেরেছি। তবে কওমি মাদরাসার বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই এতিম ও দুস্থ। তাদের বেশির ভাগই আবাসিক। সেখানে তারা থাকার সুযোগ না পেলে তাদের জীবন দুঃসহ অবস্থায় পড়বে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে শর্ত সাপেক্ষে এটা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।’
এদিকে গতকাল বাংলাদেশ ইউনেসকো কমিশন আয়োজিত আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপর করোনার সার্বিক পরিস্থিতি দেখে এবং কভিড-১৯ জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে ৪ ফেব্রুয়ারির পর মাসের প্রথম সপ্তাহেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসব, নাকি আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’